বিকল্প তৃতীয় শক্তির উত্থান শিগগিরই

সাবেক রাষ্ট্রপতি এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেছেন, বর্তমান সরকার ও জনগণের সম্পর্ককে কই মাছ ভাজার সময় ‘ফুটন্ত কড়াই থেকে লাফ দিয়ে জ্বলন্ত চুলার মধ্যে ঢুকে যাওয়া’র সঙ্গে তুলনা করেছেন। তিনি বলেন, বর্তমানে মানুষ অস্থির হয়ে গেছে। কড়াই থেকে মানুষ আর চুলার মধ্যে পড়তে চায় না।
বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেন, ‘আমরা নির্বাচন করব, তার জন্য পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। নির্বাচনে সেনাবাহিনী চাই। এই বাহিনীর সদস্যরা আমাদের দেশেরই লোক। সেনাবাহিনীর সদস্যদের শান্তি রক্ষার জন্য সারা বিশ্বে পাঠাতে পারেন আর আমাদের শান্তির জন্য নিয়োগ দিতে পারবেন না? কিন্তু সরকার ভয় পায়। শান্তিতে নির্বাচন হলে তো ভোট পাবে না।’
আজ বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) প্রতিষ্ঠার ৪৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাবেক রাষ্ট্রপতি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, মানুষ প্রথম ও দ্বিতীয় জোটের অত্যাচারে অতিষ্ঠ। মানুষ তৃতীয় শক্তি না, প্রধান রাজনৈতিক শক্তির উত্থান দেখতে চায়। তিনি সম্মিলিত নেতৃত্বে এ ধরনের রাজনৈতিক শক্তির উত্থানে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি জানিয়ে বলেন, ‘আবার ভোটারবিহীন নির্বাচন করতে চাইলে শেখ হাসিনা শুনে রাখুন, আপনি তা সামাল দিতে পারবেন না। দেশে যুদ্ধ শুরু হবে। লড়াই শুরু হবে।’
বর্তমান সংসদকে অবৈধ সংসদ হিসেবে উল্লেখ করে আবদুর রব নির্বাচনে সেনাবাহিনী নিয়োগের দাবি জানিয়ে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই সংসদ বাতিলের দাবি জানান। তিনি বলেন, সাবেক রাষ্ট্রপতি এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর নেতৃত্বে শিগগিরই ‘বিকল্প তৃতীয় রাজনৈতিক শক্তি’ আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে।
আলোচনায় কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি আবদুল কাদের সিদ্দিকী বলেন, সরকারি ও বিরোধী দলের বাইরে বিকল্প রাজনৈতিক শক্তির প্রয়োজন। এ জন্য জাতীয় ঐক্যের প্রয়োজন।
নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বর্তমান ক্ষমতাসীন দলের পায়ের নিচে মাটি নেই এবং আবার ক্ষমতা দখল করতে চাইলে তা হবে ‘গুড়েবালি’ বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘বিকল্প রাজনৈতিক শক্তির প্রশ্নে অনেকেই প্রশ্ন তুলে বলেন, পারবেন শেখ হাসিনার সঙ্গে? আমরা আইয়ুব খানের কথাও শুনতাম। আইয়ুব খানের গদি ভেঙে খান খান হয়ে গেছে। এরশাদকেও পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়েছে।’
আলোচনায় জেএসডির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কথা উল্লেখ করে বলেন, এই দুই শক্তি দিয়ে দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হচ্ছে না। বর্তমান ক্ষমতাসীন দলের পরিবর্তে আরেক জোট ক্ষমতায় গেলেও সমস্যার সমাধান হবে না। এর বাইরে যারা আছে, তাদের নিয়ে বিকল্প জোট গঠন করতে হবে।
গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরীসহ অন্য আলোচকেরা বর্তমান সরকারকে অবৈধ সরকার হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেন, দেশের জনগণ সরকারের প্রতি আস্থা রাখতে পারছে না। দেশে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.