কী পেল চট্টগ্রাম?

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল) চট্টগ্রাম পর্ব শেষ হয়েছে অগোছালোভাবেই। কোটি টাকার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ফ্লপ। চট্টগ্রামে ১৮ ম্যাচ হল প্রায় ফাঁকা গ্যালারির বিদ্রূপ সয়ে! আয়োজকদের মতে, এ লীগে চট্টগ্রামের পাওয়ার কিছু নেই। কারণ এটি জাতীয় ইভেন্টের অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম সহযোগিতা করেছে মাত্র। চট্টগ্রাম পর্বের প্রথম রাউন্ডের ছয়টি ম্যাচের মধ্যে একটিতে জয় ছাড়া পাঁচ ম্যাচই ড্র হয়েছে। এ রাউন্ডে গোল হয়েছে মাত্র ১১টি। দ্বিতীয় রাউন্ডে গোল খরা কিছুট কাটলেও দর্শকখরা কাটেনি। এ রাউন্ডের ছয় ম্যাচে গোল হয়েছে ২২টি। তৃতীয় রাউন্ডে আবার ড্র এবং গোলখরা। এ রাউন্ডে ছয় ম্যাচের পাঁচটিতে গোল হয়েছে ছয়টি। এদিকে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সমন্বয়হীনতা ও গাফিলতিতে কোনোরকমে ম্যাচগুলো সুষ্ঠুভাবে শেষ করা গেলেও আয়োজন থেকে শুরু করে বাহ্যিক কার্যক্রমে ছিল হযবরল অবস্থা। অভিযোগ আছে, ঢাকার বাইরে বাফুফের দায়িত্ব পালন করবে চিটাগাং ডিস্ট্রিক টস ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (সিডিএফএ)। কিন্তু চট্টগ্রামে সিডিএফএকে সম্পূর্ণ অকার্যকর করে রাখা হয় দেশের সবচেয়ে মর্যাদার এ পেশাদার লীগে। ফুটবল সংশ্লিষ্ট কাউকে সম্পৃক্ত করা হয়নি। অন্যদিকে সিডিএফএকে বাদ দিয়ে জেলা ক্রীড়া সংস্থাকে (সিজেকেএস) ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রাখা হলেও তাদেরও কোনো কাজ দেয়নি বাফুফে। অভিযোগ আছে, শুধু সিজেকেএস থেকে শাহাবুদ্দিন শামীমকে লোকাল অর্গানাইজিং কমিটির সেক্রেটারি করে বাফুফে।
চট্টগ্রামের প্রায় ম্যাচেই রেফারিং নিয়ে সমালোচনা হয়েছে। রেফারিদের বিতর্কিত সিদ্ধান্তে বেশ কয়েকটি ম্যাচে মাঠের উত্তেজনা গ্যালারিতে ছড়িয়ে পড়ে। বিপিএল চট্টগ্রামে আয়োজনের ব্যবস্থাপনা নিয়ে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন চট্টগ্রাম জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের (সিডিএফএ) সাধারণ সম্পাদক আ ম ম ওয়াহিদ দুলাল। তিনি ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, ‘বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের অঙ্গ সংগঠন সিডিএফএ হলেও রহস্যজনক কারণে আমাদের বাদ দিয়ে সিজেকেএসকে দিয়েই কাজ করিয়েছে বাফুফে বা বিপিএল আয়োজক কমিটি।’ বিপিএলকে ‘হাইজ্যাক’ করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। তার মতে, সিডিএফএ বা চট্টগ্রামের ফুটবল সংগঠকদের কাজে লাগালে আয়োজন আরও সুন্দর হতে পারত। সিজেকেএস আয়োজনের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয় বলে স্বীকার করে সিজেকেএস’র নির্বাহী সদস্য এবং ফুটবল উপ-কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, ‘বিপিএল বাফুফের আয়োজনেই হচ্ছে। এখানে সিজেকেএস’র কিছু পাওয়ার নেই। জাতীয় এই আয়োজনে দর্শক উৎসাহিত হয়ে সিজেকেএস’র লীগে মাঠে এলে সেটাই হতো চট্টগ্রামের পাওয়া।’ এই আয়োজনে দর্শক টানতে না পারার ব্যর্থতায় কি চট্টগ্রাম লাভবান হয়েছে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘দেখুন, আগেই বলেছি এটা বাফুফের আয়োজন। ব্যর্থতা ও সফলতা তাদের। তাদের আমরা সহযোগিতা করেছি মাত্র।’ ছোটখাটো ভুল ছাড়া বিপিএল চট্টগ্রাম পর্ব সফল হয়েছে দাবি করে লোকাল অর্গানাইজিং কমিটির সেক্রেটারি সৈয়দ শাহাবুদ্দিন শামীম বলেন, ‘লীগের মূল আয়োজক বাফুফে। সিজেকেএস নয়। আমি শুধু আমার দায়িত্ব পালন করেছি। ছোটখাটো ভুল থাকতেই পারে।’

No comments

Powered by Blogger.