বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ নিন

আবাসিক এলাকা বলতে যা বোঝায়, এমন কিছুর আর এখন অস্তিত্ব নেই ঢাকায়। আবাসিক-বাণিজ্যিক সব মিলেমিশে একাকার। এখন আবাসিক এলাকা থেকে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান সরিয়ে ফেলার একটি উদ্যোগ সরকারের তরফে দেখা যাচ্ছে। এ ধরনের ১২ হাজার বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানকে চিহ্নিত করে চিঠিও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এ ব্যাপারে যে উদ্যোগ ও পরিকল্পনার কথা জানা যাচ্ছে, তা কতটুকু বাস্তবসম্মত, তা সত্যিই এক বড় প্রশ্ন।
আবাসিক এলাকায় বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠার কাজটি এক দিনে হয়নি, বছরের পর বছর ধরে এই প্রক্রিয়া চলেছে। গত এপ্রিলে এ ধরনের প্রতিষ্ঠান সরিয়ে নিতে ছয় মাস সময় বেঁধে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় মন্ত্রিসভা। এ সময়ের মধ্যে সরিয়ে না নিলে উচ্ছেদ করার কথাও বলা হয় তখন। প্রশ্ন হচ্ছে, ৩০-৩৫ বছর ধরে যে প্রক্রিয়া চলেছে, তা কি ছয় মাসের মধ্যে সরিয়ে ফেলা সম্ভব। এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে কি কোনো কার্যকর সমীক্ষা হয়েছে? এসব প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করা অর্থের পরিমাণ কত, তার কি কোনো হিসাব-নিকাশ হয়েছে?
আরও গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নটি হচ্ছে, আবাসিক এলাকাগুলোতে যে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো গড়ে উঠল, তা ঠেকানোর দায়িত্ব যাদের ছিল, তারা এত দিন কী করেছে? এই দায়িত্বহীনতার জন্য কি সরকারের কোনো প্রতিষ্ঠানকে জবাবদিহি করতে হয়েছে? আমরা দেখছি নতুন গড়ে ওঠা আবাসিক এলাকাগুলোতেও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে এবং এখনো তা থেমে নেই। আবাসিক এলাকা থেকে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান সরানোর উদ্যোগ অবশ্যই নিতে হবে। তবে সে ক্ষেত্রে বাস্তবতা বিবেচনায় নিতে হবে। একটি বাস্তবসম্মত সময় নির্ধারণ করে এলাকা ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ধরন বিবেচনায় নিয়ে পর্যায়ক্রমে কাজটি করতে হবে। এ ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানগুলোর বিনিয়োগের বিষয়টিও বিবেচনায় নিতে হবে। দীর্ঘ সময়ে অনিয়মের জঞ্জাল যত বড় আকার ধারণ করেছে, তা আস্তে আস্তে সাফ করতে হবে। তড়িঘড়ি করে কিছু করতে গেলে উদ্যোগটিই ব্যর্থ হতে পারে।

No comments

Powered by Blogger.