তিন হামলাকারী তিন দেশের?

সিসিটিভি ফুটেজ থেকে পাওয়া বিমানবন্দরে হামলা
করা তিন সন্দেহভাজন ব্যক্তির ছবি। রয়টার্স
তুরস্ক কর্তৃপক্ষ বলেছে, ইস্তাম্বুলের আতাতুর্ক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মঙ্গলবারের হামলার ঘটনায় অংশ নেওয়া তিন ব্যক্তি রাশিয়া, উজবেকিস্তান ও কিরগিজস্তানের নাগরিক। সন্দেহভাজন ইসলামিক স্টেট (আইএস) জঙ্গিদের ধরতে গতকাল বৃহস্পতিবার পুলিশের অভিযান চালানোর পাশাপাশি এ তথ্য প্রকাশ করল দেশটি। ওই অভিযানে ৩ বিদেশি নাগরিকসহ ১৩ ব্যক্তিকে আটক করা হয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তুর্কি সরকারের এক কর্মকর্তা গতকাল বলেন, ‘হামলাকারীরা যে রাশিয়া, উজবেকিস্তান ও কিরগিজস্তানের নাগরিক, তা নিশ্চিত করতে আমরা প্রস্তুত।’ হামলার পরপরই তুরস্কের সরকার বলেছিল, লক্ষণ থেকে তাদের জোরালো ধারণা, আইএসই এ হামলা চালিয়েছে। ওই হামলায় ৪৪ জন নিহত ও প্রায় আড়াই শ মানুষ আহত হয়। গতকাল পর্যন্ত কেউ এই হামলার দায় স্বীকার করেনি। এদিকে বিমানবন্দরে গুলি ও আত্মঘাতী বোমা হামলার পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল তুরস্কের পুলিশ ১৬ জায়গায় অভিযান চালিয়ে ১৩ জন সন্দেহভাজন আইএস জঙ্গিকে আটক করেছে বলে সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
এদের মধ্যে তিনজন বিদেশি নাগরিক। তুর্কি সংবাদমাধ্যম বলেছে, পুলিশের সন্ত্রাস দমন ইউনিট পেনডিক, বাসাকসেহির, সুলতানবেইলিসহ ইস্তাম্বুলের বেশ কয়েক জায়গায় অভিযান পরিচালনা করেছে। এ ছাড়া দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় বন্দরনগরী ইজমিরেও অভিযান চালানো হয়েছে। আইএসকে অর্থায়ন, সংগঠনটির জন্য সদস্য সংগ্রহ ও উপকরণগত সহায়তা দেওয়ার অভিযোগে ওই ১৩ ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। গত বুধবার থেকে হামলায় নিহত ব্যক্তিদের শেষকৃত্য শুরু হয়েছে। তাদের বেশির ভাগই তুরস্কের নাগরিক। অনেকে বিমানবন্দরটির কর্মী। এ ছাড়া হামলায় নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে বেশ কয়েকজন বিদেশি অথবা দ্বৈত নাগরিক ছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রী জে জনসন গতকাল জানান, ওই হামলায় এক মার্কিন নাগরিক আহত হন। তবে তাঁর দপ্তর আহত ওই ব্যক্তির পুরো পরিচয় নিশ্চিত করতে পারেনি।
নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে গতকাল পর্যন্ত ২৪ জন তুরস্কের, ৬ জন সৌদি আরবের, ২ জন ইরাকের এবং চীন, জর্ডান, তিউনিসিয়া, উজবেকিস্তান, ইরান ও ইউক্রেনের ১ জন করে নাগরিক বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। এ ছাড়া তুরস্কের ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত দাবি করেছেন, নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে একজন ফিলিস্তিনি নারী রয়েছেন। বিবিসি জানায়, চরমপন্থী-ঘেঁষা তুরস্কের সরকারের কোনো কোনো মহল তাদের সমমনা সিরীয় জঙ্গি গোষ্ঠীকে আস্কারা দিচ্ছে, এমনকি লালনও করেছে বলে মনে করেন অনেকে। এর ফলে আইএসের বিকশিত হওয়ার অনুকূল পরিবেশ দেশটিতে তৈরি হয়েছে। সিরীয় যুদ্ধের প্রথম কয়েক বছরে সিরিয়ার সঙ্গে তুরস্কের সীমান্তও ফাঁক-ফোকরে ভরা ছিল। এতে সীমান্তের উভয় দিকে অস্ত্র ও জঙ্গিদের চলাচল সম্ভব হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যরা চাপ প্রয়োগ করার পরই কেবল সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ কড়াকড়ি হয়। তবে তুরস্ক বরাবরই সীমান্তে অসাধু উদ্দেশ্যে লোক চলাচলের অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছে।

No comments

Powered by Blogger.