পণ্য রফতানি দাঁড়িয়েছে ১৯৪ কোটি ডলার

আদমজী ইপিজেডের প্রধান ফটক -যুগান্তর
বন্ধ হয়ে যাওয়া এশিয়ার বৃহত্তম জুট মিল আদমজী জুট মিলের জায়গায় গড়ে উঠা আদমজী ইপিজেডে বর্তমানে ৪৮ হাজার শ্রমিক-কর্মচারী ও কর্মকর্তা কাজ করছেন। এ ইপিজেড থেকে গত ১০ বছরে (ডিসেম্বর-২০১৫ পর্যন্ত) বিদেশে রফতানি করা হয়েছে ১৯৪৫ দশমিক ৬২ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য। ডিসেম্বর-২০১৫ইং পর্যন্ত বিনিয়োগ করা হয়েছে ৩৩৯ দশমিক ১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০০২ সালের ৩০ জুন বিএনপি সরকার ১২শ’ কোটি টাকা লোকসানের অজুহাতে আদমজী মিলটিকে বন্ধ করে দেয়। ফলে ২৪ হাজার ৯১৬ জন শ্রমিক-কর্মকর্তা-কর্মচারী চাকরি হারিয়ে বেকার হয়ে পড়েন। ঐতিহ্যবাহী মিলটি বন্ধের ১৪তম বছর পূর্তি ছিল ৩০ জুন। মিলটির জায়গায় ২০০৬ সালে তৈরি করা হয় আদমজী ইপিজেড। আদমজী ইপিজেডের অগ্রগতি তথ্য (আপডেট তথ্য) সংগ্রহ করতে এ ইপিজেড কার্যালয়ে গেলে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তথ্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন সাংবাদিকদের।
আদমজী ইপিজেডকে বহির্বিশ্বের কাছে পরিচিতি করে তুলতে এর পজেটিভ কোনো সংবাদের তথ্যের জন্য ইপিজেডে কোনো সাংবাদিককে প্রবেশ করতে হলে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়। অথচ ইপিজেডের কর্মকর্তাদের আশীর্বাদে ইপিজেড অভ্যন্তরে অবাধে সন্ত্রাসী ও বহু মামলার আসামিরাও অহরহ ঢুকছে। অবাধে তারা এ ইপিজেডে ঠিকাদারি ব্যবসা চালিয়ে আসছে কর্মকর্তাদের সন্তুষ্ট করেই। আদমজী ইপিজেড সূত্র মতে, বন্ধ হয়ে যাওয়া আদমজী পাটকলের জায়গাতেই ২৪৫ দশমিক ১২ একর জমির ওপর আদমজী ইপিজেড (এইপিজেড) স্থাপিত হয়েছে। এ ইপিজেডের মোট প্লটের সংখ্যা ২২৯টি। ৬০টির বেশি দেশী-বিদেশী শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে এ ইপিজেডে। বর্তমানে কারখানা চালু রয়েছে ৪৮টি। প্রতিটি প্লটের আয়তন ২ হাজার বর্গমিটার। কোনো কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠান ১০-এর অধিকও প্লট বরাদ্দ নিয়েছেন। এসব কারখানায় গার্মেন্ট, জিপার, কার্টন, হ্যাঙ্গার, লেভেল, ট্যাগ, জুতা, সোয়েটার, টেক্সটাইল, মুজা, জুয়েলারি, পলি ও ডায়িংসহ ইত্যাদি পণ্য উৎপাদন হচ্ছে। যা ১০০ ভাগ রফতানিযোগ্য পণ্য। শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোতে বর্তমানে ৪৮ হাজার জন শ্রমিক-কর্মকর্তা-কর্মচারী কাজ করছেন। এর মধ্যে দুই শতাধিক বিদেশী কর্মকর্তা-কর্মচারীও রয়েছেন।
এ ইপিজেডে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে (ডিসেম্বর-১৫ পর্যন্ত) মোট বিনিয়োগ করা হয়েছে ৩৩৯ দশমিক ১ মিলিয়ন মার্কিন ডালার। ২০১৫-১৬ অর্থবছরের (ডিসেম্বর-১৫) পর্যন্ত ১০ বছরে সর্বমোট ১৯৪৫ দশমিক ৬২ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য রফতানি করা হয়। হংকং, কানাডা, জাপান, রোমানিয়া, সিঙ্গাপুর, জার্মানি, ইউইএ, আমেরিকা, থাইল্যান্ড, ভারত, মালয়েশিয়া, পাকিস্তান, ইউক্রেন, দক্ষিণ কোরিয়া, কুয়েত, পর্তুগাল, চীন ও মরিশাসসহ বেশ কয়েকটি উন্নত দেশ এ ইপিজেডে বিনিয়োগ করেছে। এদিকে বুধবার এ ইপিজেডের কার্যালয়ে অগ্রগতির তথ্য (আপডেট তথ্য) নিতে গেলে জিএমসহ ঊধ্বর্তন কর্মকর্তারা তথ্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। তারা বেপজার মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) নাজমা বিনতে আলমগীরের মোবাইল ফোন ধরিয়ে দেন। অবশ্য পরে ওই কর্মকর্তার সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি তথ্য দেবেন বলে জানান। এভাবেই তথ্য নিতে গিয়ে নানা হয়রানির শিকার হতে হয় সাংবাদিকদের। তবে আদমজী ইপিজেডের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) আশরাফুল কবির শুধু জানান, আদমজীতে বর্তমানে ৪৮ হাজার শ্রমিক কাজ করছেন। সবগুলো প্রতিষ্ঠান চালু হলে প্রায় ৬০ হাজার শ্রমিক-কর্মচারী এ ইপিজেডে কাজ করতে পারবেন।

No comments

Powered by Blogger.