অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় যাবে না ইইউ

যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট প্রাঙ্গণে গতকাল লন্ডনের সাবেক
মেয়র ও ব্রেক্সিটপন্থী অন্যতম শীর্ষ নেতা বরিস
জনসন। তাঁকেই প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের
উত্তরসূরি বিবেচনা করা হচ্ছে। ছবি: এএফপি
গণভোটে দেশের মানুষ ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পক্ষে রায় দিলেও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন বলেছেন, এ নিয়ে আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য তাঁর দেশ এখনো প্রস্তুত নয়। কিন্তু যুক্তরাজ্য আনুষ্ঠানিকভাবে জোট ছাড়ার প্রস্তাব না দেওয়া পর্যন্ত এগোতেও রাজি নন ইইউর নেতারা। গত বৃহস্পতিবারের গণভোটের পর গতকাল সোমবার প্রথম মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী ক্যামেরন বলেন, ইইউ থেকে বের হয়ে যাওয়ার আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া শুরু করতে তাঁরা প্রস্তুত নন। তিনি বলেন, ‘সেটি শুরু করার আগে আমাদের ঠিক করা দরকার, ইইউয়ের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের ধরনটা কেমন হবে।’ ইতিমধ্যেই নিজের পদত্যাগ ঘোষণাকারী ক্যামেরন বলেন, তাঁর স্থলাভিষিক্ত যিনি হবেন, তিনিই এ সম্পর্কের বিষয়টি নির্ধারণ করবেন। এ ছাড়া ইইউতে থাকার পক্ষে লোকজন দ্বিতীয় গণভোটের যে দাবি তুলেছেন, তা নাকচ করে দেন ক্যামেরন। গতকাল বার্লিনে জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদ ও ইতালির প্রধানমন্ত্রী মাত্তিও রেনজি বৈঠক করেন। বৈঠকের পর আঙ্গেলা ম্যার্কেল বলেন, ‘আমরা তিন দেশ একটি বিষয়ে সম্মত হয়েছি। তা হলো লিসবন চুক্তির আর্টিকেল ফিফটি খুব পরিষ্কার। সেখানে বলা আছে, ইইউর কোনো সদস্যরাষ্ট্র জোট ছেড়ে বের হয়ে যেতে চাইলে তা তারা ইউরোপীয় কাউন্সিলকে জানাবে।’
ম্যার্কেল আরও বলেন, যুক্তরাজ্য যদি জোট ছাড়ার বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু না জানায়, তবে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হবে না। আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্তরাজ্য তাদের সিদ্ধান্ত জানানোর পরই কেবল ইউরোপীয় কাউন্সিল নির্দেশিকা তৈরি করবে। সংবাদ সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট ওলাঁদ এবং প্রধানমন্ত্রী রেনজি যুক্তরাজ্যের ইইউ থেকে বের হওয়ার প্রক্রিয়া যতটা সম্ভব দ্রুত করার তাগিদ দেন। একই সঙ্গে ইইউকে নতুন উদ্যমে কাজ শুরু করার আহ্বানও জানান তাঁরা। এদিকে হোয়াইট হাউস বলেছে, ইইউ থেকে যুক্তরাজ্যের বিদায়প্রক্রিয়া যেন নিয়মতান্ত্রিক ও স্বচ্ছ হয়। বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্যের ঐতিহাসিক গণভোটে ইইউ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পক্ষে মত দেন ৫২ শতাংশ ব্রিটিশ নাগরিক। শুক্রবার এ ফলাফল প্রকাশের পর দেশটির পুঁজিবাজারে ব্যাপক ধস নামে। দেশটির অর্থমন্ত্রী জর্জ অসবর্ন গতকাল পুঁজিবাজার শান্ত রাখার প্রয়াসে বাজারে লেনদেন শুরুর আগেই বেশ সকালে একটি বিবৃতি দেন। তিনি বলেন, যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করার মতো অর্থনৈতিক সামর্থ্য যুক্তরাজ্যের রয়েছে। গতকাল দেশটির শেয়ারবাজার কিংবা পাউন্ডের দরে নতুন করে বড় ধরনের কোনো পতন হয়নি।

No comments

Powered by Blogger.