অপরিপক্ব রসবোধের কারণে যৌন হয়রানি, তাই আসামী মুক্ত!

নিজের একাধিক নারী সহকর্মীকে যৌন হয়রানির দায়ে অভিযুক্ত এক ইতালিয়ান ব্যক্তিকে খালাস দিয়েছে দেশটির একটি আদালত। আদালতের যুক্তি, ওই ব্যক্তির আচরণ যৌন তুষ্টি লাভের জন্য ছিল না, বরং অপরিপক্ব ‘সেন্স অব হিউম্যার’ বা রসবোধের কারণেই অমনটা হয়েছিল। ইতালির আদালতের এ রায় ব্যাপক নিন্দা কুড়িয়েছে। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। ইতালির জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরোর মতে, দেশের ১৬-৭০ বছর বয়সী নারীদের এক তৃতীয়াংশই শারীরিক বা যৌন সহিংসতার শিকার।
রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, ৬৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে কামুক ¯পর্শের অভিযোগ আনেন তারই কনিষ্ঠ এক নারী সহকর্মী। তবে দ্বিতীয় আরেক নারী সহকর্মী বলেছেন, ‘লোকটি আমাকেও ¯পর্শ করতো, যেন আমি ছোট্ট একটা খুকী। সে যেন আমার পেছনে মৃদু চাপড় দিচ্ছিল।’ আদালত দ্বিতীয় এ নারীর বক্তব্যকে আমলে নিয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে খালাস দেয়ার কারণ ব্যখ্যা করে।
পালেরমোর ওই আদালত বলেছে, অভিযুক্ত ব্যক্তিটি সত্যিকার অর্থেই এমন ব্যবহার করেছেন। কিন্তু তবুও তাকে খালাস দেয়া হয়েছে। কারণ, ওই ব্যক্তির আচরণ কামার্ত ছিল না। অফিসের বস্ এই ব্যক্তিই। আদালতের পর্যবেক্ষন, নিজের কর্মীদের যৌন তৃপ্তির জন্য ¯পর্শ করতো না এই আসামী। আদালত বলেন, ‘সত্যিকার অর্থে, অপরিপক্ব ও বেঠিক রসিকতাবোধের কারণে এমনটি ঘটেছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে অফিসের বস্ হিসেবে ক্ষমতার অপব্যবহারের এক ধরণের প্রবণতাও।’
তবে আদালতের এ রায়ের তীব্র সমালোচনা করেছেন অনেক বিশ্লেষক ও শ্রমিক ইউনিয়ন। লা স্টা¤পা পত্রিকার প্রথম পাতায় এক মতামত কলামে বিখ্যাত বিশ্লেষক ম্যাসিমো গ্রামেলিনি লিখেছেন, ‘পালেরমোর আদালতের এই রায় সৌদি আরবের আইনপ্রণেতাদের মতোই। গত আগস্টে আইন পরিষদে ঘোষণা দেয়া হয়েছে, যেসব নারীকে স্পর্শ করা হলে, অপরাধটা তাদেরই, স্পর্শকারীদের নয়।’ ইউআইএল শ্রমিক ইউনিয়নের সিচিলিয়ান শাখা স্থানীয় পত্রিকায় প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘এ রায়ে কর্মজীবী নারীদের সংবেদনশীলতা ও মর্যাদাকে উপেক্ষা করা হয়েছে। এবং যৌন সহিংসতাকে একপ্রকার অনুমোদন করেছে, যা ছোট আকারে হলেও ঘটে।’

No comments

Powered by Blogger.