রুশ ‘শান্তি পরিকল্পনায়’ সংস্কারের প্রস্তাব- আলেপ্পোয় বাশার বাহিনীর বড় সাফল্য

বাশার আল আসাদ
সিরিয়া নিয়ে রাশিয়ার ‘শান্তি পরিকল্পনায়’ দেশটির সাংবিধানিক সংস্কারের প্রস্তাব রয়েছে। ১৮ মাস ধরে ওই সংস্কার প্রক্রিয়া চলবে। এরপর প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হবে। তবে সংস্কার চলার সময় প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ ক্ষমতায় থাকবেন কি না, সে বিষয়ে কিছু উল্লেখ করা হয়নি। খবর বিবিসির।
এদিকে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়, সিরিয়ার সরকারি বাহিনী দেশটির আলেপ্পো শহরে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) দীর্ঘদিনের অবরোধ ভেঙে গত মঙ্গলবার একটি বিমান ঘাঁটিতে প্রবেশ করেছে।
বিবিসি জানায়, সিরিয়া নিয়ে রাশিয়ার ওই ‘শান্তি পরিকল্পনা’ জাতিসংঘে দেওয়া হয়েছে। আগামী শনিবার অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় এ বিষয়ে আলোচনা শুরু হতে যাচ্ছে। ওই আলোচনায় সিরিয়ার বিদ্রোহীদেরও অংশ নেওয়ার কথা। তার আগে রাশিয়ার ‘শান্তি পরিকল্পনার’ প্রস্তাব জানা গেল।
রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেন, শনিবারের বৈঠকের আগে ঠিক করতে হবে বিদ্রোহীদের মধ্যে কারা সংস্কার প্রক্রিয়ায় অংশীদার হবেন, আর কারা ‘সন্ত্রাসবাদী’ এবং গ্রহণযোগ্য নন।
রাশিয়ার ‘শান্তি পরিকল্পনার’ আটটি পয়েন্টের মধ্যে প্রেসিডেন্ট বাশার নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না—এমন কোনো কথা উল্লেখ করা হয়নি। তবে বলা হয়েছে, সংস্কার প্রক্রিয়ার নেতৃত্বে বাশার থাকবেন না। সব পক্ষের সিদ্ধান্তে ওই নেতৃত্ব ঠিক হবে। কিন্তু সিরিয়ার কোনো কোনো বিদ্রোহী পক্ষের অবস্থান হলো বাশারকে রেখে সিরিয়ায় শান্তি প্রতিষ্ঠা অসম্ভব।
রাশিয়া তার ‘শান্তি পরিকল্পনায়’ সিরিয়ার সরকার ও ‘বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর সমন্বিত প্রতিনিধিদের’ মধ্যে রাজনৈতিক প্রক্রিয়া শুরু করতে জাতিসংঘের বিশেষ দূত স্টেফান ডি মিসতুরার প্রতি আহ্বান জানায়। ২০১২ সালে জেনেভায় সিরিয়া নিয়ে বিশ্ব শক্তিগুলোর আলোচনায় দেশটিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের আহ্বান জানানো হয়েছিল। মূলত ওই আলোচনার ওপর ভিত্তি করেই নতুন করে রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার আহ্বান জানায় মস্কো।
মিসতুরা গত মঙ্গলবার নিউইয়র্কে বলেন, তিনি সিরিয়া সংকট সমাধানের জন্য নতুন করে আন্তর্জাতিক আলোচনা শুরু করতে বিশ্ব শক্তিগুলোর সহায়তা চান।
এদিকে রয়টার্সের খবরে বলা হয়, প্রায় দুই বছর ধরে আইএসের হাতে অবরুদ্ধ আলেপ্পোর কেইরেস বিমান ঘাঁটিতে গত মঙ্গলবার ঢুকে পড়েছে সরকারি বাহিনী। অবরুদ্ধ কয়েক শ সামরিক সদস্যকে মুক্ত করা হয়েছে।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর সিরিয়ায় আইএসের বিরুদ্ধে রুশ অভিযান শুরুর পর সরকারি বাহিনীর এটাই সবচেয়ে বড় বিজয় বলে উল্লেখ করা হচ্ছে।
অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে মুক্ত একজন সেনাসদস্য সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে বলেন, ‘আমরা এই বিজয় প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের প্রতি উৎসর্গ করছি। অঙ্গীকার করছি, আইএসের হাত থেকে সিরিয়া মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাব।’

No comments

Powered by Blogger.