রাশিয়ার ত্রাণবহরে সমরাস্ত্র থাকতে পারে : ইউক্রেন

ইউক্রেনের রাশিয়াপন্থী বিদ্রোহীদের উদ্দেশে পাঠানো ত্রাণসামগ্রী পরীক্ষা করতে চায় ইউক্রেন সরকার। শুক্রবার ইউক্রেনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী রাশিয়ার পাঠানো ওইসব ত্রাণ পরীক্ষা করে দেখবে। তারপরই সেগুলো বিদ্রাহীদের নিয়ন্ত্রিত এলাকায় যেতে দেয়া হবে। ইউক্রেন বলেছে, বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রিত পূর্ব ইউক্রেনের উদ্দেশে আসা ওইসব কার্গো (ত্রাণের গাড়ি) পরীক্ষার জন্য পরিদর্শকরা সেখানে পৌঁছেছেন। ইউক্রেন আশংকা করছে, কার্গোগুলোতে বিদ্রোহীদের জন্য সমরাস্ত্র থাকতে পারে। তবে রাশিয়ার পক্ষ থেকে সে ধরনের আশংকা প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুই সাংবাদিক বলেছেন, তারা রাশিয়ার সেনাবাহিনীর একটি বহর বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত ইউক্রেনের দিকে যেতে দেখেছেন। ইউক্রেনের নিরাপত্তা বাহিনী বলেছে, তারা বেশকিছু অস্ত্রবহনকারী গাড়ি ও সামরিক কার্গো আটকে দিয়েছে। এদিকে, সুইডেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কার্ল বিল্ট বলেছেন, ইউক্রেনের এই উদ্যোগ আন্তর্জাতিক আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।
তিনি ব্রাসেলসে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের (ইইউ) পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করার সময় এ মন্তব্য করেন। ইউক্রেনের কর্মকর্তারা বলছেন, ৮০ সদস্যের একটি পরিদর্শক দল এবং সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্য পরীক্ষা করার পরই ওইসব কার্গো লুহানস্কে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হবে। অন্যদিকে, ইউরোপ ও মধ্য এশিয়ার রেডক্রস পরিচালক লরেন্ট কার্বোজ বলেছেন, রেডক্রস কর্মকর্তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পরই সেগুলো বিতরণ করা হবে। উল্লেখ্য, চলতি বছরের এপ্রিল মাসে ইউক্রেনের লুহানেস্ক ও দোনেস্ক রাজ্যের রাশিয়াপন্থী বিদ্রোহীরা বেশ কয়েকটি শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে স্বাধীনতা ঘোষণা করে। তারপর পর থেকেই সেখানে সরকারি বাহিনী ও বিদ্রোহীদের মধ্যে সংঘর্ষ অব্যাহত আছে। চলমান সংঘর্ষে এ পর্যন্ত দুই হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছেন। ইউক্রেন সরকার এবং তার মিত্র আমেরিকা ও ইইউ অভিযোগ করছে, রাশিয়া ইউক্রেনের বিদ্রোহীদের অস্ত্রসহ নানাভাবে সহায়তা করছে। কিন্তু রাশিয়া বরাবর সে ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। বিষয়টি নিয়ে রাশিয়া এবং আমেরিকা ও ইইউর মধ্যকার সম্পর্কে ফাটল ধরেছে। এমনকি ইইউ ও আমেরিকা রাশিয়ার ওপর বেশকিছু বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। বৃহস্পতিবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ­াদিমির পুতিন ক্রিমিয়া সফর করে নতুন করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। ইউক্রেন সরকার এক বিবৃতিতে এ ঘটনাকে দেশটির সার্বভৌমত্বকে উপেক্ষা করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছে। কিন্তু রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেছেন, তারা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ইউক্রেন সীমান্তে রক্তপাত বন্ধ করতে চান। পুতিন বলেন, এই অঞ্চলে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রবেশে তারা যেমন বাধা দেবে না তেমনি কাউকে উদ্ধতভাবে প্রবেশ করতেও দেবে না। টেলিগ্রাফ

No comments

Powered by Blogger.