প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বাড়ানোর ইঙ্গিত দিলেন চাক হেগেল

চাক হেগেল
রাশিয়ার ওপর নির্ভরতা কাটিয়ে তুলে ভারতের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি সামরিক সম্পর্ক স্থাপনই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান লক্ষ্য। মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী চাক হেগেল তাঁর তিন দিনের ভারত সফরে এই কথাটিই স্পষ্ট করে দিলেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, প্রতিরক্ষামন্ত্রী অরুণ জেটলি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের সঙ্গে গতকাল শুক্রবার বৈঠক করেছেন তিনি। মোদি সরকার ক্ষমতায় আসার পর এটা দ্বিতীয় মার্কিন মন্ত্রীর ভারত সফর। সমরাস্ত্র কেনাবেচা, প্রযুক্তি হস্তান্তর ও যুগ্মভাবে সমরাস্ত্র উৎপাদন এবং উন্নয়ন ছাড়াও এই সফরে ২০১৫ সাল থেকে পরবর্তী পাঁচ বছরের জন্য প্রতিরক্ষা চুক্তি চূড়ান্ত করা হেগেলের লক্ষ্য। যুক্তরাষ্ট্র চায়, সে দেশে আগামী সেপ্টেম্বর মাসে নির্ধারিত নরেন্দ্র মোদির সফর ফলপ্রসূ করার কাজগুলো হেগেলের এই সফরে সেরে ফেলতে। রাজীব গান্ধীর আমলের বোফর্স কেলেঙ্কারির পর বিভিন্ন সময়ে ভারতীয় প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম ও সমরাস্ত্র কেনাবেচায় অনাবশ্যক রাশ টানা হয়েছে।
তবে কেন্দ্রে পালাবদলের পর প্রতিরক্ষা উৎপাদন ক্ষেত্রে বিদেশি বিনিয়োগের হার ২৬ থেকে বাড়িয়ে ৪৯ শতাংশ করার সিদ্ধান্তে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা অনুমোদন দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র এই পরিবর্তনে উৎসাহিত। হেগেল বলেছেন, ভারতকে তাঁরা প্রতিরক্ষা ‘সহযোগী’ হিসেবে পেতে আগ্রহী। ভারতের সঙ্গে তাঁরা প্রতিরক্ষা সম্পর্ক গড়ে তুলতে চাইছেন। ভারতও বিভিন্নভাবে মনে করিয়ে দিয়েছে, এখন আর তারা স্রেফ অস্ত্র কেনায় আগ্রহী নয়। তারা চায় প্রযুক্তি হস্তান্তর। সেই চাহিদা মেটাতেই হেগেল জানিয়েছেন, তাঁরা যৌথ উদ্যোগে ভারতে সমরাস্ত্রের উৎপাদন ও উন্নয়নে আগ্রহী। মনমোহন সিংয়ের আমলে দুই দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা বাণিজ্য ও প্রযুক্তি উদ্যোগের যে চুক্তি হয়েছিল, এই আমলে তা বাস্তবায়িত করা সম্ভব হচ্ছে না ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা পদে শিবশঙ্কর মেনন না থাকায়। অরুণ জেটলির সঙ্গে বৈঠকে মেননের স্থলাভিষিক্ত করা হয়েছে প্রতিরক্ষা উৎপাদন সচিবকে।তিনি ও তাঁর সমমর্যাদার মার্কিন কর্মকর্তা ঠিক করবেন, কী ধরনের সমরাস্ত্রের উন্নয়ন ও উৎপাদন যৌথভাবে করা যায়। জ্যাভলিন ট্যাঙ্কবিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র আলোচনায় উঠে এসেছে। এই ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে আড়াই কিলোমিটার দূরের ট্যাঙ্ক ধ্বংস করা যায়। গত ৭ জুলাই মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে যে চিঠি লিখেছিলেন, তাতে তিনি প্রযুক্তিসহ এই ক্ষেপণাস্ত্র দিতে আগ্রহ দেখিয়েছিলেন। ভারত তিন হাজার ৬০০টি জ্যাভলিন ক্ষেপণাস্ত্র কিনতে আগ্রহী। সেই সঙ্গে ৯০০টি উৎক্ষেপণ যন্ত্র। কাঁধে রেখে হাতে ধরে এই ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া যায়। এ জন্য খরচ হবে চার হাজার ২৮৪ কোটি রুপি। এ ছাড়া আলোচনার পর্যায়ে রয়েছে হেলফায়ার ও স্টিঙ্গার ক্ষেপণাস্ত্র সজ্জিত অ্যাপাশে ও চিনুক হেলিকপ্টার।

No comments

Powered by Blogger.