ইউক্রেনে আগাম নির্বাচনে রাজি প্রেসিডেন্ট

ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের ইনডিপেনডেন্স স্কয়ারে
প্রেসিডেন্টবিরোধী বিক্ষোভে দুই দিনে নিহত হয়েছেন
৭৫ জন। গতকাল তাঁদের স্মরণে মোমবাতি
প্রজ্বালন করেন এক নারী ছবি: রয়টার্স
বিক্ষোভ-সহিংসতায় ব্যাপক প্রাণহানির পর অবশেষে আগাম প্রেসিডেন্ট নির্বাচন দিতে রাজি হয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভিক্তর ইয়ানুকোভিচ। চলতি বছর শেষ হওয়ার আগেই ওই নির্বাচন হবে। গতকাল শুক্রবার প্রেসিডেন্ট এ প্রস্তাব দিলে তা মেনে নেন বিক্ষোভকারীরা। ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের মধ্যস্থতায় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ও বিক্ষোভকারীরা গতকাল সমঝোতা চুক্তি করতে সম্মত হন। ওই চুক্তির অন্যতম শর্ত আগাম প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। প্রেসিডেন্ট ইয়ানুকোভিচের বরাত দিয়ে গণমাধ্যম জানায়,
১০ দিনের মধ্যে জাতীয় ঐকমত্যের সরকার গঠন, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ২০০৪ সালের সংবিধানে ফিরে যাওয়া ও আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে সংবিধান সংস্কার করে প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্টের ক্ষমতার মধ্যে ভারসাম্য আনার কথা বলা হয়েছে সমঝোতা চুক্তিতে। এদিকে রাজধানী কিয়েভে গত বৃহস্পতিবার সহিংসতায় নিহতের সংখ্যা ৫০ জনে দাঁড়িয়েছে। এ নিয়ে পর পর দুই দিনে সহিংসতায় ৭৫ জন নিহত হলেন। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর ইউক্রেনে এটাই সবচেয়ে ভয়াবহ সহিংস ঘটনা। এ ঘটনার পর ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীর উপপ্রধান পদত্যাগ করেছেন। সার্বিক পরিস্থিতিতে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সমঝোতার চাপ বেড়ে যায় প্রেসিডেন্ট ইয়ানুকোভিচের ওপর। ইইউ দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা বৃহস্পতিবার রাতে ইউক্রেনের সরকার ও বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আলোচনা করে সমঝোতার জন্য একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে উভয় পক্ষকে রাজি করান।
কিয়েভের ইনডিপেনডেন্স স্কয়ারে দুই দিনে সহিংসতায় ৭৫ জন নিহত হওয়ার পর দেশটিতে গৃহযুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ারও আশঙ্কার সৃষ্টি হয়। এই পরিস্থিতিতে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সমঝোতার চাপ বেড়ে যায় ইয়ানুকোভিচের ওপর। সেই চাপ কয়েক গুণ বেড়ে যায় যখন সশস্ত্র বাহিনীর উপপ্রধান পদত্যাগ করেন। এ ছাড়া পার্লামেন্টে সন্ত্রাসবাদবিরোধী একটি আইনের পক্ষে প্রয়োজনীয় সমর্থন পেতে ব্যর্থ হয় সরকার। গত মাসেই সন্ত্রাসবিরোধী আইনটি করা হয়েছিল। ওই আইন বাতিল হয়ে যাওয়ায় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের প্রত্যাহার করতে বাধ্য হবে সরকার। রাশিয়াপন্থী প্রেসিডেন্ট ইয়ানুকোভিচের পদত্যাগের দাবিতে কিয়েভের ইনডিপেনডেন্স স্কয়ারে গত নভেম্বর থেকে বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন ইইউপন্থী বিক্ষোভকারীরা। ইয়ানুকোভিচ দেশটির অর্থনৈতিক সংকট কাটাতে ইইউর সহায়তা প্যাকেজ প্রত্যাখ্যান করে রাশিয়ার কাছ থেকে সহায়তা নেওয়ায় বিক্ষোভে নামে ইইউপন্থীরা। বিক্ষোভের মূল কেন্দ্র হয়ে ওঠে ইনডিপেনডেন্স স্কয়ার। ধীরে ধীরে ওই বিক্ষোভ সহিংসতায় রূপ নেয়। বিবিসি, রয়টার্স ও এএফপি।

No comments

Powered by Blogger.