ইউক্রেন পূর্ব-পশ্চিমের যুদ্ধ ময়দান নয় : যুক্তরাষ্ট্র-ব্রিটেন

ইউক্রেন পূর্ব ও পশ্চিমের যুদ্ধ ময়দান নয় বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি। দেশটিতে চলমান রাজনৈতিক অচলাবস্থায় রাশিয়ার ভূমিকা নিয়ে এ মন্তব্য করেছেন কেরি। মঙ্গলবার ওয়াশিংটনে ইউক্রেনের বিবদমান পরিস্থিতি নিয়ে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী উইলিয়াম হেগের সঙ্গে আলোচনা করেন জন কেরি। এ সময় তিনি এ কথা বলেন। আলোচনায় কেরি ইউক্রেনের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে সংঘাত ও বিতর্ককে খালি মাঠে গোল খেলা নয় বলে মন্তব্য করেন।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরির সঙ্গে বৈঠকের পর ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী উইলিয়াম হেগ দেশ ভাগের আশংকা থাকায় ইউক্রেনের ভূ-খণ্ডগত অখণ্ডতা রক্ষার প্রতি গুরুত্বারোপ করেন। কারণ রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকায় এমন আশংকা করা হচ্ছে। এ দুই কূটনীতির বৈঠকের পর মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এটি জয়-পরাজয়ের কোনো বিষয় নয়। এটি পূর্ব বনাম পশ্চিমের কোনো যুদ্ধও নয়।’ ‘এটি ইউক্রেনের জনগণ ও সেদেশের নাগরিকদের তাদের ভবিষ্যত বেছে নেয়ার বিষয়।’ হেগ সম গুরুত্ব দিয়ে বলেন, এটি এমন একটি দেশ যার রাশিয়াসহ বিভিন্ন উৎস থেকে আর্থিক সহযোগিতা প্রয়োজন। উল্লেখ্য, তিনি দ্রুত কিয়েভ সফরের পরিকল্পনা করছেন।
আইসিসি’তে ইয়ানুকোভিচের বিচার
ইউক্রেনের পলাতক প্রেসিডেন্ট ভিক্টর ইয়ানুকোভিচকে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ চলাকালে ‘মারাত্মক অপরাধের’ অভিযোগে বিচার করতে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) পাঠানোর পক্ষে ভোট দিয়েছে পার্লামেন্ট। মঙ্গলবার প্রস্তাবটি পার্লামেন্টে সর্বসম্মতভাবে পাস হয়। গত নভেম্বর থেকে ইউক্রেনে সরকার বিরোধী বিক্ষোভ চলেছে। গত সপ্তাহে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালালে পাল্টাপাল্টি সংঘাতে অন্তত একশ জনের মৃত্যু হয়। এই ঘটনাকে ‘গণহত্যা’ দাবি করে পলাতক ইয়ানুকোভিচকে এর জন্য দায়ী করা হয়েছে প্রস্তাবনায়।
দাঙ্গা পুলিশ বিলুপ্ত
ইউক্রেনে গত কয়েক মাসের সরকারবিরোধী বিক্ষোভে আন্দোলনকারীদের হতাহতের ঘটনায় দায়ী করে দেশটির দাঙ্গা পুলিশ বাহিনীকে ভেঙে দেয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে। পুলিশ অভিজাত ইউনিটি ‘বেরকুত’ ভেঙে দেয়ার বিষয়টি জানিয়েছেন ইউক্রেনের অস্থায়ী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরসেন আভাকোভ। বৃহস্পতিবার আজ এ নিয়ে বিস্তারিত তথ্য জানাতে ব্রিফিং করবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
গণহত্যার জন্য পুলিশ ক্ষমাপ্রার্থী
সরকারবিরোধী বিক্ষোভে তাদের সহকর্মীদের হাতে কেউ প্রাণ হারিয়েছেন। কেউ বা মার খেয়েছেন। কিয়েভের সাম্প্রতিক সেই হিংসার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে পুলিশ। পশ্চিম ইউক্রেনের এলভিভ শহরে দেখা যায় সেই বিরল দৃশ্য। রাজধানী থেকে দায়িত্ব সেরে ফেরার পরে বারকুট পুলিশ (ইউক্রেনের বিশেষ পুলিশ বাহিনী) ইউরোপীয় ইউনিয়নের সমর্থকদের মুখোমুখি হন। তাদের দেখেই প্রতিবাদীরা ‘শেম’ ‘শেম’ বলে চেঁচিয়ে ওঠেন। অফিসাররা তাদের শান্ত করেন। বলেন, তারা সরাসরি হত্যা করেননি। তবু এসেছেন ক্ষমা চাইতে। এএফপি, আলজাজিরা।

No comments

Powered by Blogger.