সাদ্দাম নামের বিপদ

সাদ্দাম হোসেন
ইরাকের সাবেক নেতা সাদ্দাম হোসেনের মৃত্যুর পর দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেছে। কিন্তু তাঁর নামের সঙ্গে মিল রয়েছে যাঁদের, তাঁরা আজও বিভিন্ন পরিস্থিতিতে বিপদের মুখে পড়ছেন। ইরাকে সাদ্দাম নামের ছড়াছড়ি দেখে বিদেশিদের কেউ কেউ চমকে ওঠেন। কারণ, সাবেক স্বৈরশাসক সাদ্দাম হোসেনের মৃত্যুদণ্ড হয়েছে ২০০৬ সালে। তাঁর প্রায় ২৫ বছরের শাসনামলে হাজার হাজার মানুষ প্রাণ হারায়। তাদের অধিকাংশই ছিল শিয়া সম্প্রদায়ের। এসব মৃত্যুর জন্য সাদ্দাম সরকারকেই দায়ী করা হয়। সাদ্দাম হোসেন উলাইবি (৩৫) একটি জেনারেটর চালান। বললেন, তাঁর দাদা ১৯৭৮ সালে সাদ্দাম নামটি রেখেছিলেন। বিশ্বব্যাপী পরিচিত সাদ্দাম তখনো প্রেসিডেন্ট হননি, তবে ধীরে ধীরে তাঁর উত্থান হচ্ছিল। বর্তমান সাদ্দামের কাছ থেকে সেই ছোটবেলা থেকেই সবার প্রত্যাশা ছিল অনেক বেশি, মূলত তাঁর নামের কারণেই। বিদ্যালয়ে বড় সাফল্য না পেলে তাঁকে শাস্তি দিতেন শিক্ষকেরা।
পরে তিনি যোগ দেন সেনাবাহিনীতে। আশা ছিল, সেনা কর্মকর্তাদের কাছ থেকে অন্তত সদয় আচরণ পাওয়া যাবে। কিন্তু হলো বিপরীত। ২০০৩ সালে সাদ্দামকে উৎখাতের পর জেনারেটর চালক সাদ্দাম আশা করলেন, এবার অন্তত নামের বোঝা বহনের যন্ত্রণা থেকে তিনি রেহাই পাবেন। কিন্তু বাস্তবতা ছিল অনেক জটিল। রাজনৈতিক দলগুলোর লোকজন তাঁর বাবাকে ডেকে ছেলের নাম পাল্টানোর পরামর্শ দিলেন। কিন্তু তিনি শুনলেন না। রাস্তাঘাটে লোকজন এখনো অপমান করে সাদ্দামকে। তাঁর অনুরোধে কান দেন না সরকারি কর্মকর্তারা। সুন্নি সম্প্রদায়-অধ্যুষিত উত্তর ও পশ্চিম থেকে শুরু করে শিয়া-অধ্যুষিত দক্ষিণাঞ্চলেও সাদ্দামদের দেখা মেলে। নামের কারণে দুর্দশা তাঁদেরও কম নয়। রামাদি শহরে কর্মরত সাদ্দাম নামের এক সাংবাদিক বললেন, সন্তানের নামের কারণে তাঁর বাবাকে সরকারি চাকরি হারাতে হয়েছে। এ রকম গল্প আরও আছে। রাজধানী বাগদাদে কুর্দি-অধ্যুষিত এলাকায় একটি বিদ্যালয়ের ছাত্র সাদ্দামকে তার সহপাঠীরা বেজায় অপছন্দ করে। বিবিসি।

No comments

Powered by Blogger.