ইউক্রেনে রক্তাক্ত সহিংসতা ২৬ জনের প্রাণহানি

ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে গতকাল পুলিশের সঙ্গে সরকারবিরোধী
বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হয়। এ সময় বিক্ষোভকারীদের তাঁবু, গাড়ি
ও আশপাশের ভবনে আগুন দেওয়া হয় ছবি: এএফপি
ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারী ও পুলিশের মধ্যে গতকাল বুধবারও ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। শহরটিতে গত মঙ্গলবার থেকে সহিংসতায় এ পর্যন্ত ২৬ জন প্রাণ হারিয়েছে। সেখানে তিন মাস আগে বিক্ষোভ শুরুর পর এটিই সবচেয়ে ভয়াবহ ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। দাঙ্গা পুলিশ কিয়েভের কেন্দ্রস্থলের ইনডিপেনডেন্স স্কয়ারে অবস্থানকারী বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে গতকাল ভোরে সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ও ককটেল নিক্ষেপ করে বিক্ষোভকারীরা। এর আগে রাতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে ইনডিপেনডেন্স স্কয়ার এলাকা থেকে হাজার হাজার বিক্ষোভকারীকে ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা চালায়। এ সময় আন্দোলনকারীদের তাঁবুগুলোতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। রাতভর ওই সংঘর্ষে বহু মানুষ আহত হয়। এর মধ্যে ২৪১ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদিকে ইনডিপেনডেন্স স্কয়ার ছেড়ে যেতে কর্তৃপক্ষ সেখানে বিক্ষোভকারীদের প্রতি একাধিকবার আহ্বান জানানোর পরও তারা সেখানেই অবস্থানের ঘোষণা দেয়। বিরোধীদের নেতা ভিতালি ক্লিশকো বলেন, তাঁরা কোথাও যাবেন না। ইইউর অবরোধ আরোপের চিন্তাভাবনা: ইউক্রেনে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনায় দেশটির ওপর অবরোধ আরোপের পরিকল্পনা করছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নেতারা। গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদ বলেন, আজ বৃহস্পতিবার একটি জরুরি সভায় ইউক্রেনের ওপর ‘অবরোধ আরোপ’ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
সংলাপের আহ্বান: ইউক্রেনের সহিংস ঘটনায় জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন উদ্বেগ প্রকাশ করে সংযমী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে সরকার ও বিরোধী পক্ষকে সংলাপে বসার আহ্বান জানিয়েছেন। আলোচনায় আসার আহ্বান জানিয়েছে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ ও যুক্তরাষ্ট্রও। মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন টেলিফোনে প্রেসিডেন্ট ইয়ানুকোভিচের সঙ্গে আলাপ করে নিজের উদ্বেগ প্রকাশ করেন। একইভাবে ইইউর পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক প্রধান ক্যাথেরিন অ্যাশটনও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। ইউক্রেনে বিভক্তি: রাশিয়া নাকি পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে ভবিষ্যত্ মৈত্রী স্থাপন—মূলত এ বিষয় নিয়ে ইউক্রেনে বিভক্তি দেখা দিয়েছে। প্রেসিডেন্ট ইয়ানুকোভিচ এখনো রাশিয়ার প্রতি আস্থা রাখছেন। ইইউর সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষরের প্রস্তাব ইয়ানুকোভিচ প্রত্যাখ্যান করায় গত নভেম্বরে দেশটিতে সরকারবিরোধী আন্দোলন তুঙ্গে ওঠে। সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত দেশ ইউক্রেন এখনো অর্থনৈতিকভাবে রাশিয়ার ওপর অনেকটা নির্ভরশীল। সেনাপ্রধানকে বরখাস্ত : প্রেসিডেন্ট ইয়ানুকোভিচ সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান জেনারেল ভ্লাদিমির জামানাকে বরখাস্ত করেছেন। গতকাল রাতে প্রেসিডেন্টের ওয়েবসাইটে এ তথ্য জানানো হয়। জামানার স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল ইউরি ইলিন। এএফপি ও বিবিসি।

No comments

Powered by Blogger.