মিসরজুড়ে ব্যাপক সহিংসতা আজ বড় সংঘাতের আশঙ্কা

প্রেসিডেন্ট মুরসির বিরোধীরা গত শুক্রবার আলেকজান্দ্রিয়ায় ক্ষমতাসীন
ফ্রিডম অ্যান্ড জাস্টিস পার্টির একটি কার্যালয়ের আসবাব রাস্তায়
এনে তাতে আগুন ধরিয়ে দেয় ছবি: এএফপি
মিসরের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসির সমর্থক ও তাঁর বিরোধীদের মধ্যে সংঘর্ষ দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়েছে। গত শুক্রবারের সংঘর্ষে কমপক্ষে তিনজন নিহত হয়েছে। এর মধ্যে একজন মার্কিন নাগরিক। সারা দেশে আহত হয়েছে কমপক্ষে দেড় শ লোক। যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক মহল এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের সরকার জরুরি কর্মী ছাড়া মার্কিন কূটনৈতিক কর্মকর্তারা নিরাপত্তাহীনতাবোধ করলে তাঁরা মিসর ছাড়তে পারেন বলে ঘোষণা করেছে। এ ছাড়া জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মিসর সফর না করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে দেশটির নাগরিকদের। প্রেসিডেন্ট হিসেবে ইসলামপন্থী নেতা মুরসির দায়িত্ব গ্রহণের এক বছর পূর্তি হচ্ছে আজ রোববার। এই দিনেই তাঁর অপসারণ চেয়ে দেশব্যাপী তুমুল বিক্ষোভ করা হবে বলে এক সপ্তাহ আগে ঘোষণা দেয় বিরোধীরা এবং ছোটখাটো বিক্ষোভ শুরু করে। তাঁদের রুখে দিতে মুরসির সমর্থক মুসলিম ব্রাদারহুডের কর্মী-সমর্থকেরা রাজপথে নেমে এলে সহিংস পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। আলেকজান্দ্রিয়ায় গত শুক্রবারের সহিংসতায় একজন মার্কিন নাগরিকসহ দুজন নিহত হয়েছেন। সেখানে আহত হয়েছে ৭০ জনের মতো। এ ছাড়া পোর্ট সাইদে বিস্ফোরণে আরেকজন মারা গেছেন। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর মিসরে তাদের নাগরিক নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। তারা বলেছে, ২১ বছর বয়সী ওই মার্কিনের নাম অ্যান্ড্রু পোক্টার। তিনি একটি এনজিওর কর্মী হিসেবে কাজ করতে মিসরে গিয়েছিলেন। পুলিশ বলেছে, নিজের ক্যামেরা দিয়ে বিক্ষোভের ছবি তোলার সময় কেউ একজন পোক্টারের বুকে ছুরিকাঘাত করে। এতে তাঁর মৃত্যু হয়। ক্ষমতাসীন ফ্রিডম অ্যান্ড জাস্টিস পার্টির (এফজেপি) আদর্শিক সংগঠন মুসলিম ব্রাদারহুড দাবি করেছে, আলেকজান্দ্রিয়াসহ আটটি স্থানে তাদের কার্যালয়ে হামলা চালানো হয়েছে। এ সময় সংঘর্ষ বেধে গেলে মুরসিবিরোধীদের একজন প্রতিপক্ষের গুলিতে নিহত হয়। পুলিশের কর্মকর্তারা বলেছেন, পোর্ট সাইদে কেউ একজন মুরসিবিরোধীদের সমাবেশে বিস্ফোরক ছুড়ে মারে। এতে কয়েকজন গুরুতর আহত হন। তাঁদের মধ্যে একজন সাংবাদিক ছিলেন। পরে হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। কর্মকর্তারা বলেছেন, কায়রো, আলেকজান্দ্রিয়া, মানসুরা, পোর্ট সাইদের পাশাপাশি নীল বদ্বীপ অঞ্চলভুক্ত দাকাহলিয়া ও বেহেইরা এলাকায়ও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে। আজ রোববারের পূর্বঘোষিত গণবিক্ষোভে যোগ দিতে কায়রোর তাহরির স্কয়ারে গতকালই বিক্ষোভকারীরা তাঁবু ফেলে জড়ো হওয়া শুরু করে। বিবিসি, এএফপি ও রয়টার্স।

No comments

Powered by Blogger.