ইতিহাসে গাপটিল, সিরিজ নিউজিল্যান্ডের

আর একটা ওভার যদি থাকত! ডাবল সেঞ্চুরিটা হয়তো হয়েই যেত। আফসোস খানিকটা করতেই পারেন মার্টিন গাপটিল। তবে যা পেয়েছেন, এতটা কি ভাবতে পেরেছিলেন ম্যাচের আগে? দেশের হয়ে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস। আদ্যন্ত ব্যাটিং। আর ভিভ রিচার্ডসের পাশে নাম লেখানো!
ওয়ানডে ক্রিকেটে একটি ম্যাজিক সংখ্যা ‘১৮৯’। ২৯ বছর আগে, এই ইংল্যান্ডের বিপক্ষেই ওল্ড ট্রাফোর্ডে ১৭০ বলে ১৮৯ রানের অপরাজিত এক ইনিংস খেলেছিলেন রিচার্ডস। সর্বকালের সেরা ওয়ানডের ইনিংস হিসেবে যেটি মোটামুটি প্রতিষ্ঠিত। রিচার্ডসের ব্যাটিং-সত্তার প্রতীকও হয়ে আছে ওই ১৮৯। কাল গাপটিলও করলেন অপরাজিত ১৮৯। এমনিতে ভিভ-গাপটিলের তুলনাই চলে না। তেমনি তুলনা চলে না রিচার্ডসের ইনিংসের সঙ্গে গাপটিলের ইনিংসের। কিন্তু রানসংখ্যায় তো অন্তত সমান্তরালে দুজন! রিচার্ডসের পাশাপাশি থাকার তৃপ্তি নিশ্চয়ই ভুলিয়ে দেবে গাপটিলের ওই ১১ রানের আক্ষেপ!
সাউদাম্পটনে কাল অসাধারণ এক ইনিংসে গাপটিল নাম লিখিয়েছেন ইতিহাসে। আর দলকে তুলে দিয়েছেন রানপাহাড়ে। ৩ উইকেটে ৩৫৯ রান তুলেছে নিউজিল্যান্ড। এই মাঠের যা সর্বোচ্চ, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে নিউজিল্যান্ডের সর্বোচ্চও। এরপর স্বাগতিকদের ২৭৩ রানে অলআউট করে ৮৬ রানের জয়। এই জয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখে সিরিজও জেতা হয়ে গেল নিউজিল্যান্ডের। আর অপরাজিত ১০৯ রান করেও প্রায় চার বছর পর দেশের মাটিতে সিরিজ হারার অংশ হলেন ইংল্যান্ডের জোনাথন ট্রট।
আগের ম্যাচে কিউইরা জিতেছিল রান তাড়া করে। কাল টস জিতে রোজ বোলের ব্যাটিং-স্বর্গে ব্রেন্ডন ম্যাককালাম সতীর্থদের পাঠালেন ব্যাটিংয়ে। আগের ম্যাচের মতোই শুরুতে জীবন পেয়েছেন গাপটিল। আর সেটার প্রতিদান দিয়েছেন নির্মমভাবে। দল জিতে যাওয়ার আগের ম্যাচে থেমেছিলেন তিন অঙ্ক ছোঁয়ার পরই। কাল হাতে ছিল পুরো ৫০ ওভার, চোখ ধাঁধানো ব্যাটিংয়ে ছাড়িয়ে গেছেন সবাইকে। এর আগে নিউজিল্যান্ডের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ইনিংস ছিল ২০০৫ সালে লু ভিনসেন্টের ১৭২।
ওই টেলরের (৫৪ বলে ৬০) সঙ্গে কাল তৃতীয় উইকেটে ১০৯ রানের জুটি গড়েছেন গাপটিল। এর আগে দ্বিতীয় উইকেটে কেন উইলিয়ামসনের (৫৫) সঙ্গে গড়েছেন ১২০ রানের জুটি। আর ম্যাককালামের (১৯ বলে ৪০) সঙ্গে জুটির প্রলয়ে দল ছাড়িয়েছে সাড়ে তিন শ। ৫০ বলে ১১৮ রানের জুটি দুজনের, শেষ ১০ ওভারে নিউজিল্যান্ড তুলেছে ১৩২! ১১১ বলে সেঞ্চুরি ছুঁয়ে গাপটিল মাঠ ছেড়েছেন ১৯ চার ও দুই ছক্কায় ১৫৫ বলে ১৮৯ রান নিয়ে। ক্রিকইনফো।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: নিউজিল্যান্ড: ৫০ ওভারে ৩৫৯/৩ (গাপটিল ১৮৯*, টেলর ৬০, উইলিয়ামসন ৫৫, ম্যাককালাম ৪০*; অ্যান্ডারসন ২/৬৫)। ইংল্যান্ড: ৪৪.১ ওভারে ২৭৩ (ট্রট ১০৯*, কুক ৩৪; ম্যাকলেনাগন ৩/৩৫, উইলিয়ামসন ২/২৫)।
ফল: নিউজিল্যান্ড ৮৬ রানে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: মার্টিন গাপটিল।

No comments

Powered by Blogger.