স্টেফানোকেও শুনিয়ে দিলেন মরিনহো

হতে পারে আলফ্রেডো ডি স্টেফানো রিয়াল মাদ্রিদ বা বিশ্ব ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম উজ্জ্বল নক্ষত্র। তবে কোচ হিসেবে হোসে মরিনহোরও একটা স্বকীয়তা আছে। নিজের দর্শনের ওপর রিয়াল মাদ্রিদ কোচের অনেক আস্থা। তারই জোরে কিংবদন্তি স্টেফানোর সমালোচনার জবাবটা সঙ্গে সঙ্গেই দিয়ে দিলেন রিয়াল মাদ্রিদের পর্তুগিজ কোচ। বললেন, তিনিই রিয়ালের কোচ, ডি স্টেফানো নন।
গত শনিবারের ‘এল ক্লাসিকো’তে রিয়াল মাদ্রিদের খেলা দেখে বিরক্ত স্টেফানো মরিনহোর কৌশলের কড়া সমালোচনা করেন। নিজের কলামে কোপা দেল রের ফাইনালে দলের কৌশল পরিবর্তনের ডাকও দেন তিনি।
চ্যাম্পিয়নস লিগের শিরোপা সবচেয়ে বেশি নয়বার জিতেছে রিয়াল মাদ্রিদ। ১৯৫৬-১৯৬০—টানা পাঁচ বছর ইউরোপিয়ান কাপ জেতে ডি স্টেফানোর সময়কার রিয়াল। সঙ্গে ১৯৫৩ থেকে ১৯৬৪—১১ বছরেই স্টেফানো রিয়ালকে লিগ শিরোপা জেতান আটবার! রিয়ালের নামটাই বদলে হয়েছিল ‘স্টেফানোর দল’। রিয়ালে স্টেফানোর আসন তাই অনেক উঁচুতে। ক্লাবটির আজীবন সাম্মানিক সভাপতি ৮৪ বছর বয়সী কিংবদন্তি।
লোকটি স্টেফানো বলেই হয়তো মরিনহোর সমালোচনার ভাষাটা একটু মার্জিত, ‘তিনি রিয়াল মাদ্রিদের ইতিহাসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মানুষ। আমি রিয়াল মাদ্রিদের ইতিহাসে কিছুই না। কিন্তু আমি কোচ এবং একমাত্র কোচই সিদ্ধান্ত নেওয়ার মালিক।’ মরিনহো দ্বিতীয়বার ‘আমি কোচ’ উচ্চারণ করে বলেন, ‘আপনি কী করতে চান? এটা আমার বিষয়। সিদ্ধান্ত একান্তই আমার।’
একটা সময় ছিল যখন রিয়ালের ছয়জন নিচে খেলতেন, চারজন খেলতেন ওপরে, রক্ষণ কাজে যাঁদের কোনো ভূমিকাই থাকত না। সময়ের পরিবর্তনে এখন ধরন বদলেছে। মরিনহো বলছেন, ‘আমি জানি, আপনাদের অনেকের কাছেই এটা সমস্যা মনে হতে পারে। কিন্তু আমি মনে করি দর্শকেরা, যারা আসলে ফুটবলবোদ্ধা নয়, তারা ধীরে ধীরে আমার স্টাইল বুঝতে পারছে এবং ভবিষ্যতে তারাই তাদের দলের পাশে থাকবে।’
রিয়ালের সাফল্য দেখতে উন্মুখ হয়ে বসে থাকেন স্টেফানো। কিন্তু শনিবারের ‘এল ক্লাসিকো’তে রিয়ালের খেলা তাঁর মন ভরাতে পারেনি। তাই মরিনহোর কৌশলের সমালোচনা করে বার্সেলোনার খেলায় নিজের মুগ্ধতার কথা জানিয়েছিলেন, ‘বার্সা বল খেলে শ্রদ্ধার সঙ্গে, আরাধনার মতো করে। এই দলকে খেলতে দেখাটা একটা আনন্দ। বার্সা ফুটবল খেলে এবং নৃত্য করে, রিয়াল অবিরত শুধু এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় দৌড়ে বেড়িয়েছে। পরিষ্কার শ্রেয়তর দল ছিল বার্সেলোনা। রিয়ালের খেলার কোনো স্বকীয়তা ছিল না।’
ডি স্টেফানোকে জবাব দিতে গিয়ে রিয়ালের কোচ এমন কোনো ইঙ্গিত দেননি যে, খেলার কৌশল বদলাতে তিনি নমনীয় ছিলেন। আর শেষ পর্যন্ত দৃষ্টিনন্দন ফুটবল জিতল, না কার্যকর ফলকেন্দ্রিক ফুটবল—সেই উত্তর এতক্ষণে আপনি পেয়ে গেছেন। কাল রাতেই যে হয়ে গেছে কিংস কাপের ফাইনাল।

No comments

Powered by Blogger.