ক্যানসারের যে লক্ষণগুলো পুরুষদের খেয়াল করা উচিত

ক্যান্সার বা কর্কটরোগ অনিয়ন্ত্রিত কোষ বিভাজন সংক্রান্ত রোগসমূহের সমষ্টি। এখনও পর্যন্ত এই রোগে মৃত্যুর হার অনেক বেশি। কারণ প্রাথমিক অবস্থায় ক্যান্সার রোগ সহজে ধরা পড়ে না, ফলে শেষ পর্যায়ে গিয়ে ভালো কোন চিকিৎসা দেয়াও সম্ভব হয় না। বাস্তবিক অর্থে এখনও পর্যন্ত ক্যান্সারের চিকিৎসায় পুরোপুরি কার্যকর কোনও ওষুধ আবিষ্কৃত হয় নি।
ক্যান্সার সারানোর জন্য বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসা পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়। তবে প্রাথমিক অবস্থায় ধরা পরলে এই রোগ সারানোর সম্ভাবনা অনেকাংশ বেড়ে যায়। ২০০ প্রকারেরও বেশি ক্যান্সার রয়েছে। প্রত্যেক ক্যান্সারই আলাদা আলাদা এবং এদের চিকিৎসা পদ্ধতিও আলাদা। বর্তমানে ক্যান্সার নিয়ে প্রচুর গবেষণা হচ্ছে এবং এ সম্পর্কে নতুন নতুন অনেক তথ্য পাওয়া যাচ্ছে।
কিছু লক্ষণ রয়েছে যেগুলো দেখলে ধারণা করা যায় ক্যানসার হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। যদি এই লক্ষণগুলোর এক বা একাধিক আপনার মধ্যে থাকে তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। চলুন পুরুষের ক্যানসার হওয়ার আগে যেসকল শারীরিক পরিবর্তন দেখা যায় সেগুলো সম্পর্কে জেনে নেই।
১) নারীদের যেমন নিজেদের স্তনে পরিবর্তন দেখা গেলে স্তন ক্যান্সারের জন্য টেস্ট করাতে হয়, তেমনি পুরুষেরও যৌনাঙ্গ বিশেষ করে অণ্ডকোষে কোনোরকম পরিবর্তন দেখা গেলে অতিসত্বর ডাক্তারকে জানাতে হবে। অণ্ডকোষের আকার আকৃতিতে পরিবর্তন, স্ফীতি, ওজনে ভারী হয়ে যাওয়া- এইগুলো অণ্ডকোষের ক্যান্সারের লক্ষণ।
২) ত্বকে নতুন কোনো তিল, আঁচিল অথবা কালো দাগ ত্বকের ক্যান্সারের পূর্বাভাস দেয়। আপনি যদি দেখেন এগুলো আগের চাইতে আকারে বড় হচ্ছে বা ছড়িয়ে পরছে তবে অবশ্যই ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।
৩) অনেক দিন ধরে মূত্রত্যাগের সময়ে ব্যথা, মূত্রের সঙ্গে রক্ত যাওয়া, শুক্রাণুর সঙ্গে রক্ত যাওয়া এগুলো হতে পারে প্রস্টেট ক্যান্সারের লক্ষণ।
৪) দীর্ঘদিন ধরে মুখে কোনো ক্ষত বা ব্যথা থাকলে ডাক্তারকে জানান। আর যারা ধূমপান করেন তাদের ক্ষেত্রে এই ঝুঁকি নিঃসন্দেহেই বেশি।
৫) মলের সঙ্গে রক্ত গেলে তা পাইলস বা এ ধরণের রোগ হতে পারে তা সত্যি। কিন্তু এটা কোলন ক্যান্সারেরও লক্ষণ হতে পারে। ডাক্তারকে দেখিয়ে নিশ্চিত হয়ে নিন।
৬) ঘন ঘন পেট ব্যথা, পেটের পেশিতে টান পড়া এবং সব সময় বমি বমি লাগাটা মোটেও স্বাভাবিক নয়। এটা হতে পারে লিউকেমিয়া অথবা ইসোফ্যাগাল, লিভার, প্যানক্রিয়াটিক অথবা কলোরেকটাল ক্যান্সারের লক্ষণ। লিউকেমিয়ার আরেকটি লক্ষণ হচ্ছে ঘন ঘন জ্বর হওয়া, ফ্লু-এর মতো উপসর্গ দেখা দেয়া এবয় ইনফেকশন হওয়া। এইসব লক্ষণ দেখলে আজই ডাক্তারের কাছে দৌড়ান।
৭) গলা খুসখুস করা এবং ঢোক গিলতে কষ্ট হওয়া একদিকে যেমন গলা এবং পাকস্থলীর ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে, তেমনি হতে পারে লাংস ক্যান্সারের প্রাথমিক পর্যায়ের উপসর্গ।
৮) ছোটখাটো ব্যথা পেলেই সহজে ত্বকে কালশিটে পড়ে যাওয়া, এমনকি কোনো কারণ ছাড়াই শরীরের এখানে ওখানে অযথাই কালশিটে পড়াটা হতে পারে লিউকেমিয়ার আরেকটি লক্ষণ।
৯) অতিরিক্ত ক্লান্তিও লিউকোমিয়ার লক্ষণ।
১০) প্রচণ্ড মাথাব্যথা মাইগ্রেনের সমস্যা তো বটেই। তবে বেশ কিছুদিন ধরে মাথা ব্যথা থাকলে ব্রেইন টিউমারের লক্ষণও হতে পারে।

No comments

Powered by Blogger.