মায়ানমারে বিশ্বের সবচেয়ে বড় জেড পাথর

সাউথ এশিয়ান মনিটর, ৭ ডিসেম্বর ২০১৬: বিশ্বের সবচেয়ে ভাল জেড পাথরের (সবুজ স্বচ্ছ মূল্যবান খনিজ) মূল উৎস মায়ানমারের একটি খনিতে ১৭৫ টন ওজনের বিশাল এক জেড পাথরের সন্ধান পাওয়া গেছে। এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত সর্ববৃহৎ এই  জেড পাথরটির বাজারমূল্য প্রায় এক কোটি ৭০ লাখ ডলার। দেশটির কাচিন প্রদেশের একটি খনি থেকে গত অক্টোবরে এই জেড পাথরটি পাওয়া যায়। পাথরটি প্রায় ১৪ ফুট উঁচু এবং ১৯ ফুট দীর্ঘ, যা আকারে শুধুমাত্র চিনের জেড বুদ্ধ প্যালেসের প্রধান ভাস্কর্য থেকে কিছুটা ছোট।
এটি এখনও স্পষ্ট নয় যে এত বড় আকারের মূল্যবান পাথর এর আগে পাওয়া গিয়েছে কিনা, কিন্তু এটা যে গত বছরে পাওয়া বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম হীরা বা সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ায় খনিতে পাওয়া বিরল রক্তবেগুনী হীরার মতো অন্য ভূতাত্ত্বিক বিস্ময়ের পর্যায়েই পড়ে তাতে সন্দেহ নেই।
জেড পাথর দ্বারা সাধারণত নেফ্রাইট ও জেডাইটেএই দুই ধরনের রূপান্তরিত পাথরকে বোঝায়, যার দাম প্রথমটার চেয়ে দ্বিতীয়টার অনেক বেশী। মায়ানমারের পাথরটি জেডাইট বলে মনে করা হচ্ছে।  ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের এক স্থানীয় নেতা ইউ টিন্ট সু বলেন ‘এটা আমাদের সরকারের সময় পাওয়া গেছে। এটা আমাদের জনগণের জন্য সৌভাগ্য নিয়ে আসবে।’ তার মতে পাথরটি প্রায় দুটি ছোটঘরের সমান হবে।
দেশটিতে পাওয়া অন্য সকল জেডপাথরের মত এটিও সম্ভবত চীনে পাঠানো হবে, যেখানে তা খোদাই করে গয়না এবং ভাস্কর্যে রূপান্তরিত হবে। চীনে জেড পাথরের নেকলেস ও ব্রেসলেট অনেক জনপ্রিয় এবং একে তারা “স্বর্গের পাথর” হিসেবে আখ্যায়িত করে।
মায়ানমারের এই মূল্যবান পাথর উত্তোলনে শ্রমিকদের অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে হয়ে কারন সেখানে প্রায়ই খনি-ভূমিধসের ঘটনা ঘটে। গত বছর নভেম্বরে একটি বড় ভূমিধসে প্রায় ১০০ জন শ্রমিক মারা গেছে। সাবেক জান্তার সাথে জড়িত এক কোম্পানি এই সেক্টরে আধিপত্য তৈরি করেছে। ২০১৪ সালে “গ্লোবাল উইটনেস” এই কোম্পানির দর ধরেছে ৩১ বিলিয়ন ডলার যা মায়ানমারের জিডিপির অর্ধেক প্রায়। সবচেয়ে দামী পাথরগুলো পার্শ্ববর্তী চীনে চোরাচালান করা হয় যা বিভিন্ন মূর্তি বানাতে ব্যবহার করা হয়।
এই আবিষ্কারের আগে বৃহত্তম নেফ্রাইট জেড পাথরের চাঁই ছিল ১.৬ মিলিয়ন ডলার মূল্যের যা ২০১৩ সালে কানাডায় পাওয়া যায়।
পলিশ করার পর পাথরটি এরকম সুন্দরই দেখায়ঃ ছবিটি হান্টিংটন মিউজিয়াম অফ আর্টথেকে তোলা।

No comments

Powered by Blogger.