নারী চরিত্রগুলো তাদের অবয়বে তুলে ধরতে চেয়েছি: পাকিস্তানি লেখিকা সরবত হাসিন

‘ইউ ক্যান’ট গো হোম এগেইন।’ ২৬ বছর বয়স্ক পাকিস্তানি সাহিত্যিক সরবত হাসিনের নতুন এ বইটি আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। পাকিস্তানের শহুরে তরুণ- যারা করাচি আর লন্ডনে ছুটাছুটিতে মত্ত, অতীত-বর্তমান, ভালোবাসা, বন্ধুত্ব, ভয়, নিরাপত্তাহীনতায় হিমশিম খেতে থাকা চরিত্রগুলোকে তুলে ধরছেন তিনি তার এই ছোট গল্পের বইটিতে। তার আত্মপ্রকাশ ঘটেছিল ‘দিস ওয়াইড নাইট’ দিয়ে ২০১৬ সালে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের ওপর তার ওই বইটি থেকে এবারেরটি ভিন্ন।
হাসিনকে এখন পাকিস্তান সাহিত্যের নতুন কণ্ঠস্বর হিসেবে পরিচিত করা হচ্ছে। তার লেখা তুলনা করা হচ্ছে মোহসিন হামিদ ও কামিলা শামসির সাথে। নিজের লেখালেখি নিয়ে স্ক্রলডট ইনকে একটি সাক্ষাতকার দিয়েছেন। এখানে তা প্রকাশ করা হলো।
প্রশ্ন: ইউ ক্যান’ট গো হোম এগেইন বইতে আপনি অনেক প্রেক্ষাপটকে একসাথে হাজির করেছেন।
হাসিন: খুবই স্বাভাবিকভাবে তা এসেছে। আমি প্রথমে গল্প লিখেছি। তারপর অন্যান্য চরিত্র সহজাতভাবেই এসে গেছে। উপন্যাসের চেয়ে ছোট গল্পে অনেক বেশি আবিষ্কারের বিষয় থাকে।
প্রশ্ন: আপনার প্রতিটি যাত্রায় জিন-পরীদের কথা আছে। এসব চরিত্রের সবগুলোই আবার বয়সে ছোট, শিক্ষিত ও বেশ স্বচ্ছল পরিবারের। এ প্রেরণা পেলেন কিভাবে?
হাসিন: আমার শৈশবে নগর কিংবদন্তিগুলো গোলকধাঁধা সৃষ্টি করত। আমি কুসংস্কার আর ঐতিহ্যের ধারণা নিয়ে কাজ করতে চেয়েছি। আমার কাছে বাড়ি কেবল একটি ভৌত কাঠামো নয়, এটি একটি সংস্কৃতিও। বাড়ি হলো পরিবার, বিশ্বাস আর প্রত্যাশার বাসা।
প্রশ্ন: আপনি আপনার মায়ের ব্যক্তিগত পাঠাগারের কথা উল্লেখ করেছেন। প্রথম দিকে আপনি কী ধরনের বই পড়েছেন?
হাসিন: আমার পরিবারের সবাই খুবই পড়ুয়া। তবে আমার মায়ের পড়ার ব্যাপ্তি ছিল বিরাট। আমার চেয়েও অনেক বেশি বিষয় নিয়ে তিনি পড়েছেন। অনেক বিষয়ে তার আগ্রহ। এসবের কিছু কিছু আমি পড়েছি।
প্রশ্ন: আপনি বর্তমানে বাস করছেন লন্ডনে। আর বেড়ে ওঠেছেন করাচিতে। আপনার বইতেও এসব বিষয় স্থান পেয়েছে।
হাসিন: একটা পর্যায়ে এই ভাগ সহজ বিষয়ে পরিণত হয়। আমি করাচিতে আমার পরিবারের সাথে সময় ব্যয় করেছি। আর কাজ করার জন্য লন্ডনে অনেক ভালো পরিবেশ রয়েছে। সব জায়গারই আলাদা বৈশিষ্ট্য রয়েছে।
প্রশ্ন: পাকিস্তানের মতো দেশে লেখালেখিতে রাজনীতি টেনে না আনতে পারাটা কতটা কঠিন কাজ?
হাসিন: আমি মনে করি, গল্প নিজেই এগিয়ে যাবে। আমার লেখালেখি রাজনৈতিক আবহবিমুখ বলে মনে করি না। প্রতিটি চরিত্রই তার দেশ, শ্রেণি, শিক্ষার আলোকে আত্মপ্রকাশ করে, এগিয়ে যায়। তাদের জীবন শূন্যতায় থাকে না।
প্রশ্ন: আপনি স্টকহোম রিভিউয়ের ফিকশন এডিটর। একইসাথে সম্পাদনা ও লেখালেখির কাজটি কিভাবে করেন?
হাসিন: ভেতর থেকেই লেখালেখির প্রেরণা পাওয়া যায়। আবার সম্পাদনাতেও এক ধরনের আনন্দ আছে। অন্যে পড়বে, সেজন্য আমি লিখি। আর আরো গভীরভাবে পড়ার জন্য সম্পাদনা করি।
প্রশ্ন: আপনার পরবর্তী গ্রন্থ কী?
হাসিন:  নতুন বই নিয়ে ভাবছি। তবে আরো কয়েকটি প্রবন্ধ ও কবিতাও লিখছি।

No comments

Powered by Blogger.