অন্ধকার জগতের নায়িকা মিমি by শুভ্র দেব

দ্বীপ অঞ্চলের এক নিম্নবিত্ত ঘরের মেয়ে আফসানা মিমি। অভাব অনটনের সংসারেই বেড়ে ওঠা। ২৩ বছর বয়সী এই তরুণী বেশ সুদর্শনা। গ্ল্যামার ও মিষ্টি চেহারা দিয়ে সহজেই আকৃষ্ট করতে পারতেন যে কাউকে। বেশি লেখাপড়া করা হয়নি তার। পাঠশালার গণ্ডি পার না হওয়া মিমি ছোটবেলা থেকে ভালোবাসতেন মিডিয়া জগৎ। স্বপ্ন ছিল একদিন বড় মডেল অভিনেত্রী হবেন। নাচ গান ও অভিনয়ে ছিলেন বেশ পারদর্শী।
দুর্গম এলাকায় থেকে তার এই স্বপ্ন পূরণ হবে না সেটা ভালোই বুঝতেন। তাইতো স্বপ্ন পূরণে দ্বীপ ছেড়ে ২০১৫ সালে আসেন রাজধানী ঢাকায়। একটি বেসরকারি টিভিতে প্রডিউসারের সহকারী হিসেবে কাজ শুরু করেন। কিছুদিন যাবার পর যুক্ত হন নাইট ক্লাবে। বিভিন্ন নাইট পার্টিতে নাচতেন হতেন শয্যাসঙ্গীও। স্বপ্নপূরণে ঢাকা এসে মিমি বড় কোনো মডেল অভিনেত্রী হতে না পারলেও হয়েছেন কলগার্ল। আর এখন মিমি মাফিয়া গার্ল হিসেবেই পরিচিত।
২০১৮ সালের ডিসেম্বরে মাত্র ১৫ দিনের ব্যবধানে শ্রীলঙ্কায় ৩০৪ কেজি হেরোইন ও ৫ কেজি কোকেনসহ তিন বাংলাদেশি আটকের পর আফসানা মিমির বিষয়টি আলোচনায় আসে। ঢাকা থেকে টাস্কফোর্স কমিটির সদস্যরা ওই তিন বাংলাদেশিকে শ্রীলঙ্কায় গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর মাদক সংশ্লিষ্টতায় আফসানা মিমির সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়। পরে ২৮শে জানুয়ারি র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) বিমানবন্দর এলাকার কাউলা থেকে আফসানা মিমিসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাকে দফায় দফায় জিজ্ঞাসা করেন। এমনকি সোমবার শ্রীলঙ্কা থেকে আসা পুলিশ নারকোটিকস ব্যুরো ও স্পেশাল টাস্কফোর্সের এসপি মাঞ্জুলা সেনারেথ ও ইন্সপেক্টর রোহান কুমারা মিমিকে মাদক সংশ্লিষ্ট বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। জিজ্ঞাসাবাদে তার কাছ থেকে বেশ চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা জানিয়েছেন।
চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলার গাছুয়া গ্রামের মো. আশরাফ উল্লাহ ও পারভিন আক্তারের বড় মেয়ে আফসানা মিমি। সৌদি আরব ফেরত অসুস্থ বাবা তার স্ত্রী দুই মেয়ে ও এক ছেলের সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছিলেন। নিয়মিত খাবার জুটত না তাদের। তাই ছোট মেয়েকে নানীর বাড়িতে দিয়ে আশরাফ স্ত্রী ও বড় মেয়ে আফসানা মিমি এবং  কোলের ছেলেকে নিয়ে চট্টগ্রামের মধ্য হালিশহরে আসেন। সেখানে তার স্ত্রী পারভিন আক্তার একটি পোশাক কারখানায় ও তিনি নিজে রং মিস্ত্রির কাজ করতেন। দু’জনের আয় দিয়ে কোন রকম চলে যেত দিন। তখন সুদর্শনা মিমিকে বিয়ে দেন এক পোশাক শ্রমিকের কাছে। বেশি দিন টেকেনি সেই সংসার। মেয়ের স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের খারাপ আচরণে সেখানে থেকে মেয়েকে নিয়ে আসেন আশরাফ উল্লাহ। কিছুদিন পর মিমির সঙ্গে সখ্য গড়ে উঠে আরেক যুবকের। কয়েক মাস তাদের মধ্যে বেশ ভালোই যোগাযোগ ছিল। পরে ওই যুবকের হাত ধরেই মিমি চলে আসে ঢাকায়।
গোয়েন্দা সূত্র বলছে, ২০১৫ সালে ঢাকায় এসে মিমি বৈশাখী টেলিভিশনে চাকরি শুরু করে। পরবর্তীতে সে নাচ গান ও অভিনয়ের প্রতি ঝুঁকে পড়ে। সেই সুবাদেই পরিচয় হয় মিশা ওরফে মিশা সওদাগর নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে। মিশা মিডিয়াতে মিউজিক ভিডিও তৈরি করতেন। গ্ল্যামার্স গার্ল মিমিকে দেখেই তিনি পছন্দ করে ফেলেন। তখন তিনি মিমিকে বলেন তার ক্যামেরা লুকিং ভালো, কাজ দিলে করবে কিনা। এভাবেই মিমির সঙ্গে মিশার সম্পর্ক বাড়তে থাকে।
কয়েক মাস পর একটি মিউজিক ভিডিওতে কাজ করার সুযোগ হয়। পরবর্তীতে মিশা মিমিকে দুবাই যাবার প্রস্তাব করে। দুবাই গিয়ে কি কাজ করবে এমন প্রশ্নে মিশা তাকে জানায় সেখানকার ফাজিয়া ডান্স ক্লাবে আসা অতিথিদের সঙ্গে গল্প, ডান্স এমনকি মোবাইল নম্বর আদানপ্রদান করা। যখন তারা কল করবে তখন তাদের সময় দিতে হবে। তার আরো কয়েক মাস পরে মিমির ভিসা টিকিট ব্যবস্থা করে দেয় মিশা।  ২০১৭ সালের ২২শে জুন মিশার সঙ্গেই সে দুবাই যায়। দুবাই এয়ারপোর্টে তাদের দুজনকে ১০-১২ জনের একটি টিম রিসিভ করে গাড়িতে উঠিয়ে পাসপোর্ট কেড়ে নেয়া হয় মিমির। বিমানবন্দর থেকে তাকে নিয়ে বন্দি করা হয় অপরিচিত এক গোপন আস্তানায়। যেখানে তার মতো আরো অনেক যুবতী বন্দি ছিল। খাবারের সময় শুধু তাকে খাবার দেয়া হতো। কারো সঙ্গে যোগাযোগ করার কোনো উপায় ছিল না। কয়েক দিন পর তাকে নিয়ে যাওয়া হয় ফাজিয়া ডান্স ক্লাবে। সেখানে তাকে বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়। মিমি তখন অনেক ব্যক্তির সঙ্গে তার মোবাইল নম্বর আদান প্রদান করে। ধীরে ধীরে সে ওই ব্যক্তিদের সঙ্গে টাকার বিনিময়ে অবৈধ মেলামেশা শুরু করে। পরবর্তীতে এক প্রবাসীর সহযোগিতায় সে ঢাকায় ফিরে আসে।
যেভাবে কলগার্ল আফসানা মিমি: স্বপ্নপূরণে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় আসার পর পরই বদলে যেতে থাকে মিমির জীবন। টিভিতে কাজ করার সূত্রে পরিচয় হয় বিভিন্ন জগতের মানুষের সঙ্গে। পোশাকে, ফ্যাশনে নিজেকে আরো বেশি আধুনিক করে তুলে। মিশা সওদাগর, রুহুল আমিন সায়মনসহ আরো অনেকের সঙ্গে তার সখ্য বাড়তে থাকতে। ওই সময় থেকে সে ফুয়াং নাইট ক্লাবসহ আরো অনেক ক্লাবে ডিজে করতো। আকর্ষণ বাড়ানোর জন্য নিজেকে সেভাবেই গড়ে তুলে মিমি। ডিজে পার্টির সঙ্গে সেখানকার পরিচিত-অপরিচিত অনেকের সঙ্গে রাত যাপনও করেছে। কিন্তু দুবাই থেকে আসার পর পুরোপুরি দেহ ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে। দুবাই ফাজিয়া ডান্স ক্লাবে সে অনেক পুরুষের সঙ্গে রাত কাটিয়েছে। বিনিময়ে তেমন কোনো টাকা-পয়সা তার ভাগ্যে জোটেনি। সব টাকা নিয়ে যেত দালালরা। তবে  সেখান থেকে পালিয়ে দেশে আসার পর তার আর্থিক অবস্থা খুব খারাপ হয়ে যায়। আশ্রয় নেয় দুসম্পর্কের এক খালার বাসায়। ওই বাসায় থেকেই সে পূর্বপরিচিতদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ফের জড়িয়ে পড়ে দেহ ব্যবসায়। ফুয়াং নাইট ক্লাব ছাড়াও বিভিন্ন হোটেলের খদ্দেরের মোবাইল কলে সে চলে যেত তাদের কাছে। ধীরে ধীরে তার অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো হতে থাকে। এ সময় তার বাবাকে টাকা-পয়সা দিয়ে সহযোগিতা করতো।
কলগার্ল থেকে মাফিয়া চক্রে: ফুয়াং নাইট ক্লাবে তার সঙ্গে পরিচয় হয় আরিফ উদ্দিন নামের এক ব্যক্তির। এই আরিফের সঙ্গে আগে থেকেই যোগাযোগ ছিল পোশাক ব্যবসার আড়ালে মাদক ব্যবসা করা চয়েজ রহমানের। মাদক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে গত বছরের ডিসেম্বর মাসেই চয়েজ রহমানকে আটক করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। আরিফ উদ্দিন, শেখ আহমেদ সুমন, শ্রীলঙ্কায় আটক সূর্যমনি, মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন ও দেওয়ান রফিউল ইসলাম ছাড়াও চায়নায় আটক আরো দুই বাংলাদেশি নারীও চয়েজ রহমানের সঙ্গে কাজ করতেন। আরিফ উদ্দিনই চয়েজ রহমানের সঙ্গে আফসানা মিমির পরিচয় করিয়ে দেয়। পরে একটি পোশাক কারখানায় মিমির চাকরি হয়। চয়েজ রহমানের নেতৃত্বে ওই সময় দেশে বিদেশে মাদকের বড় একটি সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছিল। পরে আরিফ উদ্দিন ও শেখ মোহাম্মদ সুমনের সঙ্গে চয়েজ রহমানের দ্বন্দ্বের জন্য তারা পরবর্তীতে আলাদা ব্যবসা করেন। আলাদা ব্যবসায় আরিফ উদ্দিন আন্তর্জাতিক মাদক চক্রের সঙ্গে আঁতাত করে ভয়ঙ্কর নেটওয়ার্ক গড়ে তোলেন। তাদের মূল উদ্দেশ্যে ছিল সুন্দরী নারী দিয়ে মাদক বহন করানো। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কমবয়সী সুন্দরী নারীদের তারা টার্গেট করতো। বিভিন্ন লোভনীয় কথা বলে কৌশলে যুক্ত করতো তাদের দলে। পরে তাদের দিয়ে বিভিন্ন দেশে মাদক বহন করাত।
একসঙ্গে কাজ করার সুবাদে আরিফের সঙ্গে  মিমির সম্পর্ক গভীর হয়।  তখন আরিফই তাকে মালেয়শিয়া যাওয়ার প্রস্তাব করে। ২০১৭ সালের ২৯শে আগস্ট সে প্রথম মালেয়শিয়া যায়। তার সঙ্গে ভ্রমণসঙ্গী হিসেবে ছিলেন আরিফ উদ্দিন। মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর বিমানবন্দরে তাদের রেহানা নামের এক নারী রিসিভ করেন। এই নারীকে আরিফ তার বড় বোন বলে পরিচয় করিয়ে দেয়। আর মিমি তার গার্লফ্রেন্ড বলে রেহেনার কাছে পরিচয় দেয়। পরে তারা কুয়ালালামপুরে একটি হোটেলে কয়েকদিন অবস্থান করে। ৩-৪ দিন পরে তারা তিনজন শ্রীলঙ্কার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়। শ্রীলঙ্কা যাওয়ার সময় রেহেনা আফসানা মিমির ব্যাগে কয়েকটি প্যাকেট রাখে। মিমি গোয়েন্দাদের বলেছে, সে জানত না ওই প্যাকেটে কি আছে। গুঁড়োদুধ বলে তার ব্যাগে ওই প্যাকেটগুলো রাখেন রেহেনা। পরে জানতে পারেন ওই প্যাকেটগুলোতে হেরোইন ছিল। শ্রীলঙ্কায় পৌঁছার পর আরিফ উদ্দিন মিমিকে ২০ হাজার টাকায় দেয়। টাকা পেয়ে ২০১৭ সালের ১২ই সেপ্টেম্বর মিমি শ্রীলঙ্কা থেকে আবার ঢাকায় ফিরে আসে।
এদিকে মিমির পাসপোর্ট (বিএন০৬২৭৩৪০) পর্যালোচনা করে তদন্ত কর্মকর্তারা জেনেছেন, মিমি প্রথমবার ২০১৭ সালের ২২শে জুন দুবাই গিয়ে ২৭শে জুলাই ফিরে আসে। পরে ২৯শে আগস্ট মালেয়শিয়া গিয়ে ফিরে আসে ১২ই সেপ্টেম্বর। তৃতীয়বার ২০১৮ সালের ১২ই জুন ঢাকা থেকে শ্রীলঙ্কা গিয়ে ফিরে আসে ১৫ই জুন। সর্বশেষ গত বছরের ১৯শে নভেম্বর ফের শ্রীলঙ্কা গিয়ে ফিরে আসে ৩রা ডিসেম্বর। একটি পাসপোর্ট থেকে তার বিদেশ ভ্রমণের এই তথ্য পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে তার নামে আরো একাধিক পাসপোর্ট থাকতে পারে। এসব পাসপোর্ট ব্যবহার করে সে শ্রীলঙ্কা, মালেয়শিয়াসহ আরো অনেক দেশে যাতায়াত করেছে। ২০১৮ সালে মিমি শ্রীলঙ্কায় গেলে আরিফ তাকে সূর্যমণির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়। ওই সময় সে ২৫দিন শ্রীলঙ্কায় অবস্থান করে এবং সূর্যমণির নির্দেশে বিভিন্ন এলাকায় মাদক সরবরাহ করেছে। সূত্র বলছে, সূর্যমনিসহ গ্রেপ্তার আরো দুই বাংলাদেশিকে জিজ্ঞাসাবাদে আফসানা মিমির সম্পৃক্ততার কথা বের হয়ে আসে। ৩১শে ডিসেম্বর শ্রীলঙ্কার মাউন্ট লাভিয়ানার টেম্পলার্স রোডের আবাসিক এলাকার যে বাসায় অভিযান চালিয়ে ২৭২ কেজি হেরোইন ও ৫ কেজি কোকেন উদ্ধার করা হয়েছিল সে বাসাটি আফসানা মিমির তথ্য দিয়েই ভাড়া নেয়া হয়েছিল। এই বাসা ছাড়াও আরো কয়েকটি বাসা আফসানা মিমির তথ্য দিয়ে ভাড়া করেছিল মাফিয়ারা। 
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মোল্যা নজরুল ইসলাম মানবজমিনকে বলেন, শ্রীলঙ্কান জেলে বন্দি বাংলাদেশি ওই তিন জনকে আলাদাভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। তাদের কাছ থেকে অনেক তথ্যও পাওয়া গেছে। তারা মূলত বাহক হিসেবে কাজ করতো। বাংলাদেশ থেকে এসব মাদক পাচার করা হতো না। তারা বলেছে, আফগানিস্তান থেকে করাচি বন্দর হয়ে চালান যেত কলম্বো। আটক বাংলাদেশিরা শুধু বিভিন্ন দেশ ঘুরিয়ে চালান পৌঁছে দেয়ার কাজ করতো। তিনি বলেন, তদন্তে বড় ধরনের একটি চক্রের তথ্য মিলেছে। আমরা তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালাচ্ছি।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের গোয়েন্দা শাখার অতিরিক্ত পরিচালক নজরুল ইসলাম সিকদার বলেন, আন্তর্জাতিক মাদক পাচারের বড় একটি চক্রে আফসানা মিমি জড়িত রয়েছে। তাকে এই চক্রে জড়িত করেছে আরিফ উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি। ধারণা করা হচ্ছে এই আরিফ উদ্দিন ও তার সহযোগী শেখ মোহাম্মদ সুমনই এই চক্রের মূল হোতা।
আফসানা মিমির বাবা আশরাফ উল্লাহকে এলাকায় সবাই নুরুল আফসার নামেই চিনে। গতকাল তিনি মানবজমিনকে বলেন, আমার মেয়ে ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছে। ৫ বছর আগে তাকে আমি একবার বিয়ে দিয়েছিলাম। সে কখন কার মাধ্যমে ঢাকা চলে যায় তা আমি জানি না। ঢাকা চলে যাওয়ার পর কয়েক মাস তার সঙ্গে আমার যোগাযোগ ছিল না। যখন তার সঙ্গে যোগাযোগ হয় তখন আমি তাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম সে ঢাকায় কি করে।
তখন আমাকে বলেছিল টিভিতে চাকরি করে। তার কথা আমার বিশ্বাস না হওয়ায় আমি সরাসরি ওই টিভিতে গিয়ে খোঁজ নিই। তখন সেখানকার অনেকের কাছ থেকে জেনে নিশ্চিত হই তার চাকরির বিষয়ে। তবে পত্রিকা ও টেলিভিশনে যখন তার গ্রেপ্তারের খবর শুনতে পাই তখন বিশ্বাস করতে পারিনি আমার মেয়ে এ ধরনের কাজ করবে। তিনি আরো বলেন, গত বছর জাহিদ হাসান নামের এক ছেলের সঙ্গে মিমির বিয়ে হয়েছে। জাহিদের বাবার ঢাকার নতুন বাজারে একটি বাড়ি আছে। সে বাড়িটি ভাড়া দেয়া হয়েছে। কিন্তু তারা মহাখালীর ওয়ারল্যাস গেটের একটি বাসায় থাকেন।
সন্দ্বীপ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শাহজাহান মানবজমিনকে বলেন, ওই মেয়েকে আমি কখনও দেখিনি। ঘটনার পর বিষয়টি যখন আলোচনায় আসে তখন খোঁজখবর নিয়েছি। সে এলাকায় নাটক সিনেমায় অভিনয় করতো। এক দেড় বছর আগে সর্বশেষ গ্রামের বাড়িতে এসেছিল বলে জানতে পেরেছি।
মিমির গ্রামের বাড়ি গাছুয়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আরিফুল ইসলাম সোহেল মানবজমিনকে বলেন, মিমির পরিবার খুবই নিরীহ। গত বছরের দিকে সে একটি ছেলেকে নিয়ে গাছুয়ায় এসেছিল।

No comments

Powered by Blogger.