ধার চেয়ে লজ্জা দেবেন না: মমতাঃ পশ্চিমবঙ্গে মমতার প্রার্থী তালিকায় বড় চমক মিমি ও নুসরাত

আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের জন্য পশ্চিমবঙ্গের ৪২টি আসনে প্রথম প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছেন তৃণমূল নেত্রী ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নতুন তালিকায় চমক দেখিয়েছেন তিনি।
এর আগে প্রার্থী তালিকা প্রণয়নে অভিজ্ঞ নেতা-কর্মীদের প্রাধান্য দেওয়া হবে জানালেও বাদ দেওয়া হয়েছে দুই তারকাকে। তাঁরা হলেন সন্ধ্যা রায় ও তাপস পাল। সেই জায়গায় আনা হয়েছে নতুন দুই মুখ চিত্রনায়িকা নুসরাত জাহান ও মিমি চক্রবর্তীকে। এ ছাড়া দলের ৩৬ সাংসদের মধ্যে ৮ সাংসদকে মনোনয়ন দেননি মমতা। মনোনয়নপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের তালিকায় আছেন কংগ্রেস থেকে আসা তিন বিধায়কও। তাঁরা হলেন কানাইলাল আগরওয়াল, অপূর্ব সরকার ও আবু তাহের। আরও রয়েছেন কংগ্রেসে থেকে তৃণমূলে আসা সাংসদ মৌসুম বেনজির নূর।
মমতার দলের তিন সাংসদ তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। তাঁরা হলেন মুকুল রায়, অনুপম হাজরা ও সৌমিত্র খান। এর আগে তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যোগ দেন বিধায়ক দুলাল বর।
এই দল বদলের খেলার মধ্যে গতকাল মঙ্গলবার বিজেপির পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছেন, ‘আমরা দু–এক দিনের মধ্যে আমাদের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করছি। ওই তালিকায় আপনারা আরও চমক দেখবেন। বহু নামকরা নেতা যোগ দিচ্ছেন বিজেপিতে।’
তবে এর জবাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপিকে কটাক্ষ করে বলেন, ‘ধার চেয়ে লজ্জা দেবেন না! এবার তো একটা সাইনবোর্ড লাগাতে হবে। ওরা তো চুপি চুপি আমাকে বলতে পারত গাদ্দারগুলোকে দাও। একজন গাদ্দারকে নিয়ে হয়নি। বললেই পারত আমি তাহলে আরও গাদ্দার পাঠিয়ে দিতাম।’
এই দল বদল নিয়ে কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি সোমেন মিত্র বলেছেন, ‘ওরা তো এ দল ও দল ভাঙিয়ে প্রার্থী করছেন। আবার ওদের মুখে বড় কথা।’
এই প্রসঙ্গে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র বলেছেন, ‘প্রার্থী তালিকা দেখে মনে হচ্ছে, গোটা দশেক আসনে তৃণমূল বিজেপিকে ওয়াকওভার দিতে চাইছে।’
দীপা দাসমুন্সি বিজেপিতে যাচ্ছেন না
সোমবার প্রয়াত কংগ্রেস নেতা প্রিয় রঞ্জন দাসমুন্সির স্ত্রী দীপা দাসমুন্সি দিল্লিতে বিজেপি নেতা অরবিন্দ মেননের সঙ্গে দেখা করার পর রাজনৈতিক মহলে রটে যায় বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন তিনি। উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ আসন থেকে লড়বেন। দীপা দাসমুন্সি রায়গঞ্জ আসনে দাঁড়াতে চাইলেও কংগ্রেসে-বামফ্রন্ট আসন সমঝোতার প্রশ্নে এ আসনটি ছেড়ে দেওয়া হয় বাম দলকে। তা ছাড়া এই আসনের বর্তমান সাংসদ মোহম্মদ সেলিম সিপিএমের সাংসদ।
তবে গতকাল দীপা দাসমুন্সি জানিয়ে দিয়েছেন তিনি কংগ্রেসেই আছেন। দল ছাড়ার কোনো প্রশ্ন নেই। এ ঘোষণার পর এবার দীপাকে উত্তর মালদহ আসনে প্রার্থী করার তৎপরতা শুরু করেছে কংগ্রেস।
পশ্চিমবঙ্গে মমতার প্রার্থী তালিকায় বড় চমক মিমি ও নুসরাত
নির্বাচন ঘোষণার দু’দিনের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের ৪২টি আসনেই প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস । মঙ্গলবার তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে নির্বাচনী কমিটির বৈঠক শেষে দলনেত্রী এই প্রার্থী তালিকা ঘোষণা  করেছেন। এই প্রার্থী তালিকায় নতুন ১৮ জনকে এবার প্রার্থী করেছেন মমতা। বাদ পড়েছেন আটজন। তবে এবারের সবচেয়ে বড় চমক হল বাংলা চলচ্চিত্রে দুই জনপ্রিয় অভিনেত্রীকে প্রার্থী করা। মিমি চক্রবর্তী  ও নুসরাত জাহানকে এবার দুই গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে প্রার্থী করেছেন মমতা। নুসরাতকে প্রার্থী করা হতে পারে বলে গুঞ্জন ছিল আগে থেকেই। কিন্তু মিমি প্রার্থী হবেন এমন কোন আগাম খবর ছিল না।
নির্বাচন ঘোষণার দু’দিনের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের ৪২টি আসনেই প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস । মঙ্গলবার তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে নির্বাচনী কমিটির বৈঠক শেষে দলনেত্রী এই প্রার্থী তালিকা ঘোষণা  করেছেন। এই প্রার্থী তালিকায় নতুন ১৮ জনকে এবার প্রার্থী করেছেন মমতা। বাদ পড়েছেন আটজন। তবে এবারের সবচেয়ে বড় চমক হল বাংলা চলচ্চিত্রে দুই জনপ্রিয় অভিনেত্রীকে প্রার্থী করা। মিমি চক্রবর্তী  ও নুসরাত জাহানকে এবার দুই গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে প্রার্থী করেছেন মমতা। নুসরাতকে প্রার্থী করা হতে পারে বলে গুঞ্জন ছিল আগে থেকেই। কিন্তু মিমি প্রার্থী হবেন এমন কোন আগাম খবর ছিল না।
নুসরাতকে প্রার্থী করা হয়েছে সীমান্তবর্তী সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকা হিসেবে পরিচিত বসিরহাট কেন্দ্রে। আর মিমিকে প্রার্থী করা হয়েছে ঐতিহাসিক সুগত বসুর ছেড়ে দেওয়া আসন যাদবপুরে। তবে এবার মাত্র সাতজন সেলিব্রিটিকে প্রার্থী করা হয়েছে। গতবার এই সংখ্যা ছিল ১০। এবার অবশ্য অভিনেত্রী সন্ধ্যা রায় এবং তাপস পালকে প্রার্থী করা হয় নি। আগেরবারের জয়ী অভিনেত্রী শতাব্দী রায়, অভিনেতা দেব অধিকারি, অভিনেত্রী মুনমুন সেন, নাট্যাভিনেত্রী অর্পিতা ঘোষ এবং খেলোয়াড় প্রসূণ বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেদের কেন্দ্রে এবারও প্রার্থী হয়েছেন।
তবে মুনমুনকে বাঁকুড়া থেকে সরিয়ে প্রার্থী করা হয়েছে আসানসোল কেন্দ্রে। আর বাঁকুড়া কেন্দ্রে দশ বছর পর ফের লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী করা হয়েছে রাজ্যের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে। এ বছরের নির্বাচনে মমতা যাদের প্রার্থী করেন নি তারা হলেন সুগত বসু, ইদ্রিশ আলি, সন্ধ্যা রায়, তাপস পাল, সুব্রত বক্সী, তাপস মন্ডল, উমা সরেন ও পার্থপ্রতিম রায়। দুই সাংসদ সৌমিত্র খান এবং অনুপম হাজরা কিছুদিন আগেই দল থেকে সাসপেন্ড হয়েছেন। দু’জনেই এখন বিজেপিতে। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে যে ৮ আসনে তৃণমূল কংগ্রেস পরাজিত হয়েছিল তার মধ্যে ৭টিতেই প্রার্থী পরিবর্তন করা হয়েছে।
গতবার তৃণমূল কংগ্রেস ৪২টি আসনের মধ্যে ৩৪টি আসনে জয়ী হয়েছিল। কংগ্রেস জয়ী হয়েছিল ৪টি আসনে এবং বামফ্রন্ট ২টি আসনে। বিজেপি জয়ী হয়েছিল ২টি আসনে। এবার অবশ্য তৃণমূল কংগ্রেস দুজন মন্ত্রী-সহ মোট ৭ বিধায়ককে লোকসভা নির্বাচনের লড়াইয়ে প্রার্থী করা হয়েছে। এছাড়া এক রাজ্যসভা সাংসদ এবং কলকাতা পুরসভার চেয়ারম্যানকেও লোকসভার নির্বাচনে প্রার্থী করা হয়েছে। বহরমপুরে অধীর চৌধুরীর বিরুদ্ধে প্রার্থী করা হয়েছে এককালে অধীরের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ অপূর্ব সরকারকে। কান্দি থেকে কংগ্রেসের টিকিটে জয়ী হওয়া বিধায়ক অপূর্ব  এখন রয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসে।
উত্তর মালদহে বিদায়ী সাংসদ মৌসম নূর কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন কিছুৃদিন আগেই। সেখানে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী মৌসমকেই তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী করা হয়েছে। আর দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতীকে প্রার্থী করা হয়েছে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার দার্জিলিং শহরের বিধায়ক অমর সিংহ রাইকে। এবার নতুন প্রার্থী করা হয়েছে মালা রায়, অসিত মাল ও দুষ্কৃতীর গুলিতে নিহত কৃষ্ণগঞ্জের বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাসের স্ত্রী রূপালি বিশ্বাসকে। রাজ্যসভার সাংসদ মানস ভৃইঞাকেও প্রার্থী করেছেন মমতা। 

No comments

Powered by Blogger.