আলোকচিত্রীর চোখে তাহরির স্কয়ারের গ্রাফিতি by সাজ্জাদ হোসেন

ছবি তোলা আমার নেশা। এজন্যই কিনা কে জানে, মিসর নিয়ে অন্যরকম একটা আগ্রহ ছিল। তাই আফ্রিকা মহাদেশের এই রাষ্ট্রে আলোকচিত্র কর্মশালায় অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়ে অন্যরকম ভালোলাগা কাজ করলো মনে। মিসরের রাজধানী কায়রোতে বাংলাদেশ, মিসর ও নরওয়ের আলোকচিত্রীদের মিলনমেলা ঘটেছিল এই আয়োজনে। ঘটনাটি পাঁচ বছর আগের। তবে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো, ২০১১ সালের মিসর বিপ্লবের দুই বছর পর পা রেখেছিলাম মিসরের রাজধানী কায়রোতে। সাত বছর আগে মিসর বিপ্লবের সময় সবার মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয় তাহরির স্কয়ার। সেখানেই ঘটেছিল ওই বিপ্লব। এ কথা সারা দুনিয়ার জানা।
কায়রোর মিলনকেন্দ্র কিংবা চত্বর তাহরির স্কয়ার জায়গাটি ‘শহীদ চত্বর’ নামেও পরিচিত। ঊনিশ শতকে ‘প্যারিস অন দ্য নাইল’-এর রূপকার খিদিভ ইসমাইলের নামানুসারে ‘ইসমালিয়া স্কয়ার’ হিসেবে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯১৯ সালের মিসর বিপ্লবের পর ‘তাহরির স্কয়ার’ বা মুক্ত স্কয়ার নামে পরিচিত পায় এই জায়গা। তবে নামটি তখন সরকারি স্বীকৃতি পায়নি। রাজতন্ত্র থেকে প্রজাতন্ত্রে উত্তরণের সময় ১৯৫২ সালের মিসর বিপ্লবের পর এর নাম পরিবর্তন করা হয়।
কায়রো যেন ছবির মতো একটা শহরে পরিণত হয়েছে তাহরির স্কয়ারের গ্রাফিতির সুবাদে। ২০১১ সালের বিপ্লবের পরে দেয়ালে দেয়ালে সৃষ্টি হয়েছে এসব। স্বাভাবিকভাবেই এগুলোতে বইছে বিপ্লবের গল্প। সারাদিন ঘুরে ঘুরে সেগুলো দেখেছি। মুগ্ধ হয়েছি। ক্যামেরাবন্দি করতে ভুল হয়নি মোটেও। সেসব ছবির মধ্যে কয়েকটি নিয়ে এই ফটোস্টোরি।
* গ্রাফিতির সামনে উচ্ছ্বল নতুন প্রজন্ম।  
* দুই হাত প্রসারিত করে বুক বাড়িয়ে দিয়েছেন মিসরীয় আন্দোলনকারী মোহাম্মদ গাবার সালাহ। জিকা নামে বেশি পরিচিত তিনি। 
* বিপ্লবের প্রেক্ষাপটে গ্রাফিতিতে তুলে ধরা হয়েছে বিদ্রুপাত্মক মনোভাব। 
* পৃথিবীর যেকোনও প্রান্তে বিপ্লবের প্রসঙ্গ এলেই যেন বিপ্লবী চে গুয়েভারার মুখ এসে যায়।
* গ্রাফিতি যেন রঙতুলিতে শোষকের বিরুদ্ধে বিপ্লব।
* শিশু থেকে বৃদ্ধ, সবাইকে দেখা যায় কায়রোর মোহাম্মদ মাহমুদ সড়কের গ্রাফিতির সামনে।
* গ্রাফিতির মধ্য দিয়ে পুরো কায়রো যেন বিপ্লবের গল্প বলে যায়। 
* সীমানা প্রাচীরের গ্রাফিতি দেখতে আসা একদল তরুণ। 
* বিপ্লবীদের মুখ ভেসে ওঠে গ্রাফিতিতে। 
* এসব গ্রাফিতির মাধ্যমে ইতিহাস জানতে পারছে নতুন প্রজন্ম।
* গ্রাফিতির সামনে শিশু-কিশোরদের আনন্দ-উচ্ছ্বাস।
* কায়রোর অনেক বাড়ির দেয়ালে গ্রাফিতি মুগ্ধ করে সামনে দিয়ে যাওয়া পথচারীদের। 
* কায়রোর আবাসিক এলাকার ফুটপাতের দেয়ালেও গ্রাফিতি। 
* শুধু দেয়াল নয়, কায়রোর সীমানা প্রাচীরেও চমৎকার কিছু গ্রাফিতি আছে। 
* গ্রাফিতির সামনে কিশোর-কিশোরীদের ছবি তোলার এমন চিত্র হরহামেশাই চোখে পড়ে। 
* বাড়ির দেয়ালে মানুষের নানান অভিব্যক্তি। 
* শৈল্পিক নৈপুণ্যে সাজানো তাহরির স্কয়ারের গ্রাফিতি দেখতে বিশ্বের অনেক দেশের পর্যটকরা পা রাখেন কায়রোতে। 

No comments

Powered by Blogger.