আমতলী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স: তিন লক্ষাধিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবায় ২ জন ডাক্তার by এম এ সাইদ খোকন

বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণে উপকূলীয় অঞ্চলে হতদরিদ্র ও জেলে পরিবারগুলো চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ভেঙে পড়েছে বরগুনার আমতলী উপজেলার স্বাস্থ্য সেবার মান। এখানে স্বাস্থ্যসেবা বলতে হাসপাতালে আসা আর যাওয়া। ন্যূনতম সেবাও পাচ্ছে না আমতলীর মানুষ। সরকার আমতলী উপজেলার তিন লাখ মানুষের স্বাস্থ্যসেবার কথা চিন্তা করে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল নির্মাণ করেছিল। সরকারের সে উদ্দেশ্য ব্যাহত হচ্ছে। বরগুনা জেলার আমতলী উপজেলার ৫০ শয্যাবিশিষ্ট স্বাস্থ্যকমপ্লেক্স ও ট্রমা সেন্টারটি নানা সমস্যায় জর্জরিত। তিন লক্ষাধিক মানুষের জন্য রয়েছেন মাত্র ২ জন ডাক্তার। এ অঞ্চলের অসহায়, হতদরিদ্র পরিবারগুলো চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এক তথ্যে জানা গেছে, আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে ২১ জন এমবিবিএস ডাক্তারের পদ থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে ১৮টি পদই শূন্য রয়েছে। বর্তমানে ২ জন ডাক্তার দিয়ে ৩ লক্ষাধিক মানুষের নামমাত্র চিকিৎসাসেবা চলছে। ফার্মাসিস্টের ২টি পদের ১টি শূন্য, মেডিকেল টেকঃল্যাবের ৩টি পদের ১টিই শূন্য, ফিজিওথেরাপি ১টি পদের ১টিই শূন্য, অফিস সহকারী-কাম টাইপিস্টের ৩টি পদের ২টিই শূন্য, জুনিয়র মেকানিকের ১টি পদের ১টিই শূন্য, কমপাউন্ডারের ১টি পদের ১টিই শূন্য, কারডিওগ্রাফারের ১টি পদের ১টিই শূন্য, ঝাড়ুদারের ৫টি পদের ১ জন প্রেষণে সিএস অফিসে ১টি শূন্য। বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণে উপকূলীয় অঞ্চলে হতদরিদ্র ও জেলে পরিবাররা চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। হাসপাতালটি পটুয়াখালী ও বরগুনা দুই জেলার মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত। অপরদিকে প্রসূতি রোগীরা আমতলী হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি হলে তাদের কৌশলে প্রাইভেট ক্লিনিকে পাঠিয়ে দেয়ার অভিযোগ রয়েছে। এবং তাদের কাছে থেকে মোটা অংকের টাকার মাধ্যমে প্রাইভেট ক্লিনিকে ডেলিভারি করানো হয়। এ কাজে হাসপাতালের একটি গ্রুপ জড়িত বলে তথ্যসূত্রে জানা যায়। টয়লেট-পয়ঃনিষ্কাশনের ব্যবহারের অবস্থা নেই। বিদ্যুতের লো-ভেল্টেজে হাসপাতালের বিদ্যুৎ সংশ্লিষ্ট কাজের নিশ্চয়তা নেই। নিজস্ব জেনারেটরের ব্যবস্থা নেই। জরুরি বিভাগে টাকা দাবি করেন কর্তব্যরতরা। এতসব সমস্যা নিয়ে চলছে হাসপাতালটির সেবা কার্যক্রম। বিদ্যুৎ চলে গেলে রোগীদের টাকায় মোমবাতি কিনে জ্বালাতে হয়। কলাপাড়া, বরগুনা-তালতলীর অসংখ্য রোগী এ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসে। বিশেষ করে কুয়াকাটা-ঢাকা ও বরগুনা-ঢাকা ও আমতলী-ঢাকা মহাসড়কের যানবাহন দুর্ঘটনায় আহত রোগী প্রতিদিন এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এলেও ডাক্তার, যন্ত্রপাতি ও ওষুধের অভাবে চিকিৎসা থেকে রোগীরা বঞ্চিত হচ্ছে। চিকিৎসা নিতে আসা রোগী দিলরুবা আক্তার জানান, হাসপাতালের মধ্যে লাইট নষ্ট। উপজেলা স্বাস্থ্য প. প. কর্মকর্তা ডা. শংকর প্রসাদ অধিকারী বলেন, অভিযোগ সম্পর্কে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি আরো বলেন দ্রুত এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য লোকবল দরকার।
তিন জন ডাক্তারের মধ্যে আমি প্রশাসনিক কাজে ব্যস্ত থাকি দু’জন ডাক্তার দ্বারা চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খেতে হয়। তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়গুলো যথারীতি অবহিত করবেন বলে উল্লেখ করেন। বরগুনার সিভিল সার্জন ডা. হুমায়ূন শাহিন খান বলেন, বরগুনা জেলায় ১৩২ জন ডাক্তারের মধ্যে ডাক্তার আছে মাত্র ১৭ জন। এব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে একাধিক বার জানিয়েছি।

No comments

Powered by Blogger.