বালিয়াকান্দির মানুষ বিক্রির হাট

পিঁয়াজ, রসুন, মাছ, তরকারি, গোশত, কাপড়সহ নিত্যপণ্যের বাজার বসলেও রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার জঙ্গল বাজারে তীব্র শীত উপেক্ষা করে প্রতিদিন ভোরে বসছে মানুষ বিক্রির হাট। বিভিন্ন জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন থেকে খুব ভোরে জড়ো হয়ে বিক্রি হয় মানুষ। তাদের কাজ শেষে গন্তব্যে পৌঁছে যায়। বৃহস্পতিবার ভোরে সরেজমিন জঙ্গল বাজারে গিয়ে দেখা যায়, পাংশা, হাবাসপুর, নারুয়া, চরঘিকমলা, অলংকারপুর, বালিয়াকান্দি, মধুখালী, শ্রীপুর, মাগুরা এলাকার বিভিন্ন লোকজন জড়ো হয়ে আছে। যেমন লোকজন জড়ো হচ্ছে তেমনিভাবেই বিক্রি হয়ে চলে যাচ্ছে। বিক্রি হওয়ার পর থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত কাজ শেষ করেই যার যার গন্তব্যে চলে যাবে। প্রতিজন ৩৭০ টাকা থেকে শুরু করে ৪ শ' টাকা বিক্রি হয়েছে। চরঘিকমলা গ্রামের ইমরান হোসেন জানায়, তিনি ফজরের আযানের সময় বাড়ি থেকে রওনা হয়ে পায়ে হেঁটেই জঙ্গল বাজারে আসেন।
এরপর বিক্রি হয়েছেন ৩৮০ টাকায়। দুপুর ১টা পর্যন্ত কাজ শেষ করে বাড়ি চলে যাবেন। চষাবিলা গ্রামের রতন ও মৃগীর হেদু জানান, তারা ভ্যান যোগে ৪-৫জন মিলে এক সাথে এসেছেন। বিক্রি হওয়ার পর কাজ শেষ করে ওই ভ্যানেই বাড়িতে চলে যাবেন। এ অঞ্চলে পিঁয়াজের চাষ বেশি হওয়ার কারণে দূর-দূরান্ত থেকে এসেও বিক্রি হয়ে কাজ শেষ করে বাড়িতে ফিরতে পারেন। এজন্য বিভিন্ন এলাকার লোকজন বেশি জড়ো হন। অলংকারপুর গ্রামের আহম্মদ আলী ও মোহন ফকির জানান, তাদের বাড়ির কাছে হাট হওয়ার কারণে কোনো কষ্ট করতে হয় না। পায়ে হেঁটে গিয়েই বিক্রি হন। কাজ শেষ করেই বাড়ি ফেরেন। প্রতিদিন ভোরে মানুষ বিক্রির হাট বসার কারণে পাংশা, শ্রীপুর, মধুখালী উপজেলাসহ বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মানুষ আসে ভ্যান, নসিমনসহ বিভিন্ন গাড়িযোগে। কাজ শেষ করে আবার ফিরে যান। মানুষ ক্রয় করতে আসা হাফিজুল, অমল, কৃষ্ণ, হরেন্দ্রনাথ, এনামুল জানান, এখন পেঁয়াজের আবাদের মৌসুম চলছে। বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে লোকজন পাওয়া যায় না। এজন্য জঙ্গল বাজার থেকে প্রতিদিন যে যার মতো লোক দরকার তা সহজেই ক্রয় করে নিয়ে যান। এতে তাদের কাজও সহজে হয়। এখানে কেউ বিক্রি হতে এসে ফেরত যায় না। দূর-দূরান্তের লোকজন আসে গাড়ি নিয়ে। কাজ শেষ করার পর ওই গাড়িতেই আবার ফেরত চলে যান।

No comments

Powered by Blogger.