প্রথম হ্যাটট্রিক শরীফের

বৃষ্টির লুকোচুরিতে শেষই হল না ম্যাচটা। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে শেখ জামাল ২৯ ওভারে তিন উইকেটে ১২০ রান করতেই বৃষ্টি শুরু হয়। বৃষ্টির কারণে ঘণ্টাখানেক খেলা বন্ধ থাকে। এরপর আবার খেলা শুরু হলে ম্যাচ নেমে আসে ৩৮ ওভারে। নির্ধারিত ৩৮ ওভারে শেখ জামাল ১৬৮ রান করে। কিন্তু ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতিতে গাজী গ্রুপ ক্রিকটার্সের লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৯৬। ১৬.১ ওভারে তারা তিন উইকেটে ৮৩ রান করতেই আবার বৃষ্টি। এরপর আর খেলা শুরু করা যায়নি। কাল যেখানে শেষ হয়েছে, আজ রিজার্ঢ ডে’তে সেখান থেকেই ম্যাচটি শুরু হবে। ২১.৫ ওভারে বাকি সাত উইকেট নিয়ে গাজীর প্রয়োজন ১১৩ রান।
তবে বৃষ্টির সঙ্গে দিনটা নিজের করে নিয়েছেন গাজীর অভিজ্ঞ পেসার মোহাম্মদ শরীফ। এবারের ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লীগে প্রথম হ্যাটট্রিক করেছেন এই ডান-হাতি পেসার। মাহমুদউল্লাহ তখন বিপজ্জনক হতে শুরু করেছেন। আগের ওভারেই ছক্কা মেরেছেন বাঁ-হাতি স্পিনার মইনুল ইসলামকে। প্রথম স্পেলে পাঁচ ওভারে ৩২ রান দিয়ে উইকেটশূন্য ছিলেন শরীফ। দ্বিতীয় স্পেলে ফিরে মাহমুদউল্লাহকে ফিরিয়েই শুরু করেন শিকার। তার স্লোয়ারে তুলে মারতে গিয়ে শেখ জামাল অধিনায়ক (৩০) ক্যাচ দেন সাঈদ আনোয়ার জুনিয়রের হাতে। পরের বলেই বোল্ড উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান জাবিদ হোসেন (১৩)। ফিল্ডিং যেভাবে সাজানো হয়েছিল তাতে মনে হয়নি হ্যাটট্রিকের পরিকল্পনা রয়েছে শরীফের। হ্যাটট্রিক ডেলিভারির মুখোমুখি হয়েছিলেন অভিজ্ঞ বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যান নাজমুস সাদাত। অভিজ্ঞতার লড়াইয়ে জিতেছেন শরীফ। এলবিডব্লুর আবেদনে আম্পায়ারের আঙুল উঠতেই উল্লাসে মাতেন ৩২ বছর বয়সী এই পেসার। উইকেট পড়েছে পরের বলেও। তবে সেটি জমা হয়নি শরীফের ঝুলিতে। রানআউট হন মুক্তার আলি। টানা চার বলে উইকেট, তিন উইকেটে ১৪৯ থেকে মুহূর্তেই শেখ জামালের স্কোর সাত উইকেটে ১৪৯!
পরে ইনিংসের শেষ বলে শফিউল ইসলামকেও বোল্ড করেছেন শরীফ। ৪৩ রানে নিয়েছেন ৪ উইকেট। ৩৮ ওভারে শেখ জামাল করেছে নয় উইকেটে ১৬৮। সর্বোচ্চ ৬৯ রান করেন ওপেনার আবদুল্লাহ আল মামুন। এদিকে লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে বাংলাদেশের কোনো ক্রিকেটারের এটি সপ্তম হ্যাটট্রিক। এর চারটি হয়েছে আন্তর্জাতিক ওয়ানডেতে। ২০০৬ সালে হারারেতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করেন শাহাদাত হোসেন। ২০১০ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই মিরপুরে হ্যাটট্রিক করেন আবদুর রাজ্জাক। ২০১৩ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে রুবেল হোসেন। আর ২০১৪ সালে অভিষেকে হ্যাটট্রিকের প্রথম কীর্তি গড়েন তাইজুল ইসলাম, সেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। এর বাইরে লিস্ট ‘এ’তে বাংলাদেশের আগের দুটি হ্যাটট্রিকই হয় ২০১৩ সালে ঢাকা প্রিমিয়ার লীগে একই দিনে! রুবেল হোসেন ও তাপস বৈশ্য হ্যাটট্রিক করেন। ১৯৬ রান তাড়া করতে নেমে ৮৩ রানে তিন উইকেট হারিয়েছে গাজী গ্রুপ। এনামুল হক ৩৬ এবং অধিনায়ক অলক কাপালী ১৪ রানে অপরাজিত রয়েছেন। আরাফাত সানি দুটি উইকেট নিয়েছেন।

No comments

Powered by Blogger.