তুরস্কে সরকারবিরোধী সংবাদপত্রের নিয়ন্ত্রণ নিল সরকার

তুরস্কের সর্বাধিক প্রচারিত ‘দৈনিক জামান’-এ পুলিশি অভিযান চালিয়ে এর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে সরকার। দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আন্দালুর বরাত দিয়ে শনিবার আলজাজিরার এক খবরে এ কথা জানানো হয়। শুক্রবার মধ্যরাতে তুরস্কের সবচেয়ে বড় সংবাদপত্র ‘জামান’র কার্যালয়ে ঢুকে অভিযান চালায় পুলিশ। এ সময় বাইরে সমবেত সমর্থক ও বিক্ষোভকারীদের ওপর কাঁদানে গ্যাস ও জলকামানও চালানো হয়। এর আগে সংবাদপত্রটি রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণের আওতায় আনার জন্য আদালতের এক রুল জারি করা হয়। আদালতের সেই নির্দেশের ভিত্তিতেই পুলিশ অভিযান চালায় এর কার্যালয়ে। দৈনিক জামান’র প্রচার সংখ্যা ছিল সাড়ে ছয় লাখ। পত্রিকাটি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোগানের রাজনৈতিক বিরোধী যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ধর্মীয় নেতা ফেতুল্লাহ গুলেনের সমর্থক ছিল। এ কারণে সরকার পত্রিকাটি ‘কবজা’ করেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। জামান পত্রিকার বিরুদ্ধে অভিযোগ, এটি হিজমাত আন্দোলনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এক পাদ্রি ফেতুল্লাহ গুলানের নেতৃত্বে এ হিজমাত আন্দোলনকে ‘সন্ত্রাসবাদী’ আখ্যা দিয়ে এ সিদ্ধান্ত নেয় আদালত। সমর্থকদের ওপর কাঁদানে গ্যাস ও জলকামান নিক্ষেপ করা হয় জামান’র এডিটর-ইন-চিফ আবদুল হামিত বিলিসি বলেন, ‘গত তিন-চার বছর ধরেই এই চর্চা চলে আসছে। যারাই সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলে তাদের বিরুদ্ধেই মামলা দেয়া হয় অথবা কারাগারে নিক্ষেপ করা হয়। সরকার গণমাধ্যমের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়।’ এটা আমাদের দেশের জন্য অন্ধকার অধ্যায়। তবে একদা এই ফেতুল্লাহ গুলান তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোগানের ঘনিষ্ঠজন ছিলেন। পরে তাদের দু’জনের মতানৈক্য হয়। এ সময় সমর্থকরা জামান কার্যালয়ের বাইরে সমবেত হয়ে স্লোগান দেন। স্লোগানে তারা বলেন, ‘মুক্ত গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করা যাবে না।’ বেশ কিছু হিজমাত আন্দোলন সমর্থককে গ্রেফতার করে পুলিশ। এদিকে দৈনিক জামান জব্দের ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মীদের বিভিন্ন সংগঠন। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কভিত্তিক সংগঠন কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টসের (সিপিজে) নির্বাহী পরিচালক জোয়েল সিমন এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আজকের এ সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে তুরস্কে সমালোচনাধর্মী সাংবাদিকতার অবশিষ্টাংশকে গলা টিপে ধরা হল।’

No comments

Powered by Blogger.