সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের মুক্তি দেওয়া যাবে না: সুপ্রিম কোর্ট

ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীকে হত্যায় জড়িত ব্যক্তিদের মুক্তি দেওয়ার প্রক্রিয়া স্থগিত করেছেন সুপ্রিম কোর্ট। গতকাল বৃহস্পতিবার ভারতের সর্বোচ্চ আদালত এই নির্দেশনা দেন। সুপ্রিম কোর্ট গত মঙ্গলবার রাজীব হত্যায় জড়িত থাকার দায়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া তিনজনের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন। পরদিন বুধবার ওই তিনজনসহ হত্যাকাণ্ডে জড়িত সাতজনকে মুক্তি দেওয়ার ঘোষণা দেয় তামিলনাড়ু রাজ্য সরকার। রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তকে আদালতে চ্যালেঞ্জ জানায় ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। এর পরিপ্রেক্ষিতে তামিলনাড়ু সরকার ও ভেলোর কারাগার কর্তৃপক্ষের প্রতি জারি করা এক নির্দেশনায় সুপ্রিম কোর্ট গতকাল বলেন, আগামী ৬ মার্চের আগে তাঁদের মুক্তি দেওয়া যাবে না। ওই দিন বিষয়টি নিয়ে শুনানির দিন ধার্য করেছেন আদালত। সুপ্রিম কোর্ট বলেন, ‘সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের যে প্রক্রিয়ায় মুক্তি দেওয়া হচ্ছিল, তা যথাযথ ছিল না। এটা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।’ তামিলনাড়ু সরকারের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে সরকারপক্ষের আইনজীবী আদালতে বলেন, রাজীব গান্ধী হত্যাকাণ্ডে সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের দণ্ড কমানোর এখতিয়ার শুধু কেন্দ্রীয় সরকারেরই আছে; কোনো রাজ্য সরকার এটা করতে পারেন না। তামিলনাড়ু সরকারের সিদ্ধান্তে হতাশা প্রকাশ করেন রাজীব গান্ধীর ছেলে ও ক্ষমতাসীন কংগ্রেসের সহসভাপতি রাহুল গান্ধী।
তিনি বলেন, একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর হত্যাকারীদের যদি এভাবে মুক্তি দেওয়ার চেষ্টা করা হয়, তাহলে সাধারণ মানুষ কীভাবে ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করবে। এদিকে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং গতকাল এক বিবৃতিতে তামিলনাড়ুর সরকারের সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়ে বলেন, রাজীব গান্ধী হত্যাকাণ্ড পুরো জাতির প্রতি চরম আঘাত। কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে তামিলনাড়ু সরকারের কাছে পাঠানো এক বার্তায় বলা হয়, তামিলনাড়ু সরকার যে রাজীব গান্ধীর হত্যাকারীদের ছেড়ে দিচ্ছে, তা আইনসম্মত নয়। এই প্রক্রিয়া আর এগিয়ে নেওয়া উচিত হবে না। তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী জে জয়ললিতা গত বুধবার জানান, রাজীব গান্ধী হত্যা মামলায় বর্তমানে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত তিন আসামি পেরারিভালান, মুরুগান ও সন্থানকে একই মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত অন্য চার আসামির (নলিনী, রবার্ট পাইয়াস, জয়াকুমার ও রবিচন্দ্রন) সঙ্গে মুক্তি দেওয়া হবে। তিন দিনের মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের মতামত পাওয়া না গেলে ওই সাতজন মুক্তি পাবেন। রাজীব গান্ধীকে ১৯৯১ সালের মে মাসে হত্যা করা হয়। হত্যায় জড়িত সবাই শ্রীলঙ্কাভিত্তিক বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন লিবারেশন টাইগার অব তামিল ইলমের (এলটিটিই) সদস্য। ১৯৮৭ সালে শ্রীলঙ্কায় ভারতীয় শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়ার কারণে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর ওপর ক্ষুব্ধ ছিল এলটিটিই। টাইমস অব ইন্ডিয়া ও এএফপি।

No comments

Powered by Blogger.