স্বামী হত্যার তদন্ত চান সাফিয়া গাদ্দাফি

লিবিয়ার লৌহমানব খ্যাত মুয়াম্মার গাদ্দাফি হত্যাকাণ্ডের পূর্ণাঙ্গ তদন্ত দাবি করেছেন তার স্ত্রী সাফিয়া ফারকাশ। তিনি ভয়েস অব রাশিয়াকে দেয়া এক চিঠিতে এ দাবি করেন। সোমবার রুশ সংবাদ মাধ্যমটি এ খবর জানায়। সাফিয়া এ চিঠি দিয়েছেন মূলত তার বোন ফাতিমার সাহায্যে এবং ভয়েস অব রাশিয়া চিঠিকে পুরো বিশ্বের জন্য একটি ঘোষণা বলে মন্তব্য করেছে।
সাফিয়া ফারকাশ লিবিয়ার ওপর ন্যাটোর হামলাকে আগ্রাসন বলে উল্লেখ করেছেন। এছাড়া তার স্বামী মুয়াম্মার গাদ্দাফিকে শহীদ আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, ন্যাটোর আগ্রাসনের কারণে লিবিয়া গোলযোগের ভূমিতে পরিণত হয়েছে। ২০১১ সালের ২০ অক্টোবর গাদ্দাফি হত্যাকাণ্ডের কথা স্মরণ করে ফারকাশ বলেন, ন্যাটোর বিমান থেকে লিবীয় নেতার বহরের ওপর বোমা হামলা চালানো হয়। সে সময় তার সঙ্গে ছিলেন আমার ছেলে ও বেশ কিছু লোক। বোমা হামলার পর আহত দেহগুলোকে একদল লোক কসাইয়ের মতো ক্ষতবিক্ষত করে যাদের আমি খুনি ছাড়া অন্য কিছু বলতে পারছি না। এসব লোক আমার স্বামী ও সন্তানের ওপর যে কার্যকলাপ করেছে তা কোনো ধর্ম সমর্থন করতে পারে না। তিনি আরও বলেন, এরপর এসব শহীদের লাশ তাদের আত্মীয়স্বজনের কাছে ফেরত দেয়া হয়নি।
আমি একেও হত্যাকাণ্ডের চেয়ে কম অপরাধ বলে মনে করি না যা ইতিহাসে নজিরবিহীন। এসব ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে সাফিয়া ফারকাশ জানান, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ যারা এ ঘটনার সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত তাদের সবাইকে অবশ্যই বলতে হবে এসব শহীদের মৃতদেহ কোথায় এবং তাদের আত্মীয়স্বজনকে সঠিক উপায়ে তাদের দাফনের ব্যবস্থা করার সুযোগ দিতে হবে। পাশাপাশি গাদ্দাফি হত্যার ঘটনা তদন্তের জন্য সাফিয়া ফারকাশ আফ্রিকান ইউনিয়নের প্রতি জোরালো আহ্বান জানিয়েছেন। বড় ছেলে সাইফুল ইসলামের পাশে দাঁড়াতেও তিনি বিশ্ববাসীর প্রতি আহ্বান জানান।
পার্কে রূপান্তরিত হচ্ছে গাদ্দাফির প্রাসাদ : লিবিয়ার সাবেক স্বৈরশাসক মুয়াম্মার গাদ্দাফির সেনা ব্যারাকগুলো এবং প্রাসাদ বাব আল-আজিজিয়াকে পার্কে রূপান্তরিত করার ঘোষণা দিয়েছে দেশটির সরকার। শনিবার দেশটির পর্যটনমন্ত্রী ইকরাম বাশ ইমাম এ ঘোষণা দেন। গাদ্দাফির শাসনামলের আগে বাব আল-আজিজিয়া এলাকাটি একটি পার্কই ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা এটিকে এখন এর আগের অবস্থায়ই ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি। ‘আর এটা ত্রিপোলি শহরের মাঝখানটায় অবস্থিত বিধায় একে জনগণ এবং পর্যটকদের উপভোগের জন্য একটি সবুজে ঘেরা উদ্যানে রূপান্তরিত করাই হবে সর্বোত্তম কাজ’, যোগ করেন ইমাম। ছয় কিলোমিটার আয়তনের প্রাসাদ বাব আল-আজিজিয়া মূলত তৈরি করেছিলেন রাজা ইদ্রিস।

No comments

Powered by Blogger.